"রাসূলুল্লাহ (সা.) যেভাবে নামায পড়াতেন"বইটির ভূমিকা: নামায (সলাত) ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। নামায (সলাত) দ্বীনের সেই খুঁটির ন্যায় যা ইসলাম নামক ইমারতকে ধরে রেখেছে। সুতরাং এই স্তম্ভটি না থাকলে মােটেও ঠিক না, আবার নড়বড়ে হলেও হবে না। তা হতে হবে সুশােভিত, সুদৃঢ়, মজবুত ও সুকঠিন; কেননা স্তম্ভ নড়বড়ে হলে যেমন ইমারত ভেঙ্গে প্রাণ নাশের কারণ হতে পারে, তেমনি নামায সঠিক না হলে তা হবে আমাদের ধ্বংসের কারণ। কুরআনী ঘােষণা في الصين الزين هم عن صلاتهم ساهون. লাল “ধ্বংস সে সকল নামাযির জন্য, যারা তাদের নামায সম্পর্কে (গাফেল) উদাসীন।” নামায (সলাত) হতে হবে রাসূলুল্লাহ আল্লাহঃ-এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে। হাদীসের বাণী- . 331; ; “তােমরা আমাকে যেমনভাবে নামায (সলাত)। আদায় করতে দেখ ঠিক সেভাবে নামায আদায় কর।” ইসলাম এক ও অবিভাজ্য; কিন্তু ইসলামে রয়েছে চিন্তা-গবেষণার স্বাধীনতা। এর ফলে ইসলামে সৃষ্টি হয়েছে চারটি মাযহাব ও বিভিন্ন গবেষকদের চিস্তাপ্রসূত বিভিন্ন মাসআলা। এরই প্রেক্ষাপটে নামাযসহ বিভিন্ন ইবাদতে পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এ পার্থক্য মেনে নেওয়াটা যুক্তিগ্রাহ্য। তবে পার্থক্যটা অবশ্যই কুরআন ও হাদীসের আলােকে হতে হবে। বর্তমানে নামাযের (সলাতের) বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণকে কেন্দ্র করে একদল আরেক দলকে না হক বলার প্রবণতা তৈরি হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ সকল দল ও মতের প্রেক্ষাপটে নামাযের (সলাতের) অসংখ্য বই বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু সব সাধারণ (ধর্মপ্রাণ) মুসলমানের সহজ-সরল উপায়ে রাসূলুল্লাহ এর নির্দেশিত পথে নামায আদায়ের পদ্ধতি সম্বলিত বইয়ের চাহিদার আলােকে এ বইটি রচনা করা হয়েছে। এই বইয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে ওযু, গােসল, তায়াম্মুম, নামাযের ধারাবাহিক বিবরণ, আহকাম, আরকান, নামায ভঙ্গের কারণ, বিভিন্ন সুন্নাত ও নফল নামাযের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। বইটি বাংলাদেশের সর্বস্তরের সচেতন পাঠকদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ মাই-এর (সলাতের) নামাযের পদ্ধতি তুলে ধরার ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখলে আমাদের সময় ও শ্রম সার্থকতা পাবে। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে এ বইয়ের অসিলায় সুমহান জান্নাতের অধিবাসী করুন। আমীন!
মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-এর প্রভাষক (ইসলামিক স্টাডিজ)। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার অর্ন্তগত মান্দারী ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা অধ্যাপক মাওলানা মো: আবদুল লতীফ ও মাতা নাসিমা আক্তার। তিনি তাঁর পিতা-মাতার কাছেই ইসলামি শিক্ষার মূল উৎস কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনের শুরুতে তিনি ‘সৃজন কিন্ডার গার্টেন’-এ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষা লাভ করেন। সাধারণ শিক্ষা ছেড়ে তিনি ইসলামি শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে চন্দ্রগঞ্জ কারামাতিয়া কামিল মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি যাদৈয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা হতে দাখিল, আলিম ও ফাজিল পাস করেন এবং মাদ্রাসা-ই আলিয়া, ঢাকা থেকে হাদিস বিভাগে কামিল পাস করেন। একইসাথে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। বি.এ অনার্স শ্রেণিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সর্বোচ্চ নম্বর ‘ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট’ হওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সিটিটিউট (আই.ই.আর) থেকে গবেষণা প্রশিক্ষণ কোর্স Advanced Course on Research Methodology সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় প্রতিরোধে ইসলাম : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শিরোনামে এম.ফিল গবেষণা করেছেন। তিনি একজন গবেষক, লেখক ও অনুবাদক। ইতোমধ্যে তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অর্থায়নে ‘শ্রমিকের কর্মস্থলের নিরাপত্তা বিধানে ইসলাম : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের গবেষণা সহকারী হিসেবে গবেষণাকর্ম সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে ‘ইসলামের আলোকে বর্জ ব্যবস্থাপনা : পরিপ্রেক্ষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ গবেষণা প্রকল্পের গবেষণা সহকারী হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। গবেষণা প্রবন্ধ, রেফারেন্স গ্রন্থ, অনুবাদ, সংকলন বই মিলিয়ে তার প্রকাশনা সংখ্যা ত্রিশোর্ধ।