ফ্ল্যাপে লিখা কথা ‘আচ্ছা, তোকে আমি ইংলিশে ট্রান্সলেট করে দেব।’ খালেদ বলে, ‘পড়ে দেখিস। তোর মা কী রকম লায়ার। আর তোর মা যে খালি ডায়মন্ড কেনে, মার্কেটে গেলেই একটা করে ডায়মন্ড কিনে আনে, কেন আনে এখন বোঝে।’ ‘চিন্তা কর! কী বলে তোর বাবা। এই, তুমি তো একটা কমপ্লেক্স ক্যারাক্টার। এইভাবে কেউ ভাবে?’ পরশ মধ্যস্থতা করে। সে তখন কিচেনের সিংকে, কাপ-পিরিচগুলো ধুচ্ছে। গলা উঁচিয়ে বলে, ‘কিন্তু মা, তুমি কিন্তু আমার আসল প্রশ্নটাই এড়িয়ে যাচ্ছ। তোমরা প্রথম কিস্ করলে কখন? বিয়ের কতদিন আগে? কোথায়?’ খালেদ আর সুমি পরস্পরের মুখের দিকে লাজুক ভঙ্গিতে তাকায়। ‘মনে নাই রে।’ খালেদ বলে। পরশ বলে, ‘মনে নাই? এটা হতে পারে? ফার্স্ট কিস্ কেউ ভোলে?’ ‘মনে থাকলেও এটা তোকে বলতে পারব না, বাবা।’ সুমি বলে, ‘আমাদের কালচারে এই সব কথা কেউ ছেলেমেয়ের সঙ্গে শেয়ার করে না।’ ‘বিয়ের কত দিন আগে, সেটা বললে কী হয়?’ ‘ধর, দুই মাস।’ সুমি বলে। ‘কোথায়? মানে ডেটিং প্লেস কোনটা ছিল?’ পরশ জানতে চায়।
ভূমিকা এই গল্পগুলো লেখা হয়েছে সম্পাদকগণের নির্দেশে। কালি ও কলম, প্রথম আলোর নানা সাময়িকী, সমকাল, অনন্যা, আনন্দ আলো-এইসব পত্রিকায় গল্পগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। একেকটা গল্পের আমেজ তাই একেক রকম। সহৃদয় পাঠক এই রকমফেরটা সহানুভূতির সঙ্গেই বিবেচনা করবেন, আশা করছি। সকলের মঙ্গল হোক। আনিসুল হক
সূচিপত্র অসমাপ্ত চুম্বনের ১৯ বছর পর রোদ বিক্রির ব্যবসা দু’দন্ড শান্তি ও বনলতা ছাপাখানার গন্ধ জামাল (৯) এবং তার পিঠা বিক্রেতা মায়ের কিরকেট তুমি কি কেবলই ছবি গল্পের জন্যে অপেক্ষা করতে গিয়ে... ধীরেন্দ্রনাথের হামাগুড়ির কারণ সর্বনাশের আশায় চক্র ছাপাখানায় একটা ভূত থাকে লোকটি বউকে বড়ো ভালোবাসত ই-মেইলে পাওয়া গল্প বালক ভুল করে পড়েছে ভুল বই পড়েনি ব্যাকারণ পড়েনি মূল বই সেই বিকেলের গল্প
আনিসুল হক, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর আশির দশকে আবির্ভূত হওয়া একজন প্রখ্যাত কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গদ্যকার্টুন, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী, শিশুসাহিত্যসহ সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে রয়েছে তার সাবলীল বিচরণ। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। আনিসুল হকের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীতে। শিশু মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ জন্মেছিলো লেখালেখি আর ছবি আঁকায়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন প্রথম কবিতার বই ‘খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আনিসুল হক এর বই প্রকাশের কালটি ছিলো উত্তাল স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়। আনিসুল হক এর বই সমূহ প্রেমের প্রতি পক্ষপাত করলেও একইসাথে সেসময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আমি আছি আমার অনলে’, ‘আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার’, এবং ‘জলরংপদ্য’। মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘মা’, আনিসুল হক এর বই সমগ্র এর মধ্যে পাঠকের মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছিল। এছাড়াও ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’, ‘নিধুয়া পাথার’, ‘আয়েশামঙ্গল, খেয়া’, ‘ফাঁদ’, ‘বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম’, ‘ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি’, ‘ফাল্গুন রাতের আঁধারে’ তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকা পালন করেছেন দীর্ঘদিন, এখনও লিখে যাচ্ছেন পত্রিকার কলাম। লিখেছেন বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক ও সিনেমার চিত্রনাট্যও। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের আধুনিক এই লেখক।