রোববার সকালে সনাতন পাঠক স্যারের বাড়িতে ঢুকেই সায়ন দেখল এক অচেনা ভদ্রলোক অপেক্ষা করছেন। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। ছিপছিপে চেহারা। ধুতির উপর শার্ট পরা। কপালে তিলক। পাঠক স্যারের চোখাচোখি হতেই বিনয়ী কণ্ঠে বললেন, 'আপনাকে অসময়ে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। ওসমানিয়া ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সুব্বারাওয়ের কাছে এ ঠিকানা পেয়েছি। একমাত্র আপনি আমাকে ভয়ানক সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারেন।' 'হ্যাঁ, প্রফেসর রাও আমার বহুদিনের পরিচিত। আলাপ হল কী করে ওর সঙ্গে? মনে হচ্ছে আপনি একজন ব্যবসায়ী। আঙুলে ঘন নীল হিরেটাই সেকথা বলে দিচ্ছে। তবে আপনার পেশা নিয়ে আমার কোনো উৎসাহ নেই।' 'না স্যার। আত্মপরিচয় দিতেই হচ্ছে। হায়দরাবাদের আমিরপেটে আমাদের জুয়েলারি শোরুম। বংশপরম্পরায় হিরের ব্যবসা। রাওসাহেব ফ্যামিলি ফ্রেন্ড বলতে পারেন।' খামে ঢাকা একটা চিঠি এগিয়ে দিলেন ভদ্রলোক। পাঠক স্যার মনোযোগ দিয়ে চিঠি পড়তে শুরু করলেন। পড়া শেষ করে কয়েক মুহূর্ত চুপ করে রইলেন। সায়নের বিস্ময়ের শুরু এখান থেকেই। ধৈর্য বাঁধ মানতে চায় না। পাঠক স্যারের মুখ দেখে শুধু আঁচ করতে চেষ্টা করে সে। স্যারের ঠোঁটের ফাঁকে উঁকি মারা স্বভাবসিদ্ধ রহস্যময় হাসিটার মানে খুঁজে না পেয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকায়।