“বাংলাদেশের সংবিধান : ভাষা-সংশোধন প্রস্তাব" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ সংবিধান যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু এটি সুস্পষ্ট এবং ভাষিক বিচারে ত্রুটিহীন হওয়া বাঞ্ছনীয়। দু' পাঠের মধ্যে বাংলা পাঠই যেহেতু প্রধান, ফলে সংবিধানকে যথাসম্ভব ত্রুটিহীন করার কাজটি বাংলা পাঠের পরিচর্যার মাধ্যমেই সূচিত হওয়ার দাবি রাখে। এ কাজটি সম্পন্ন হলে এর সাথে সর্বাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে ইংরেজি পাঠটির সংশােধনকর্মে হাত দেয়া উচিত। সংবিধানের যে প্রস্তাবিত পাঠ এখানে উপস্থাপিত হয়েছে, তা যে সর্বাংশে ত্রুটিহীন, সৌষ্ঠবপূর্ণ এবং সকলের কাছে গ্রহণযােগ্য, এমন দাবি আমরা করছি না। আমাদের আন্তরিক বিচারে যা গ্রহণযােগ্য মনে হয়েছে, তা-ই এখানে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে যা না বললেই নয়, তা হলাে – পুরাে সংবিধানের পুরাে প্রস্তাবিত পাঠটি তৈরি করা ছিল অচিন্তনীয় দুরুহ একটি কাজ। সর্বোচ্চ সতর্কতা, গভীর আন্তরিকতা এবং কঠোর পরিশ্রমের ফসল এটি। প্রস্তাবিত রূপ তৈরিই শুধু নয়, কেন এই রূপটি প্রস্তাবিত হলাে, প্রতিটি ক্ষেত্রে তার ব্যাখ্যা প্রদান করা ছিল অধিকতর দুরুহ। যে প্রস্তাবটি পেশ করা হলাে তা-ই চূড়ান্ত, এমন কথা আমরা বলছি না। আমরা সংবিধান-বিশেষজ্ঞ, ইংরেজি ভাষা-দক্ষ এবং ভাষাবিজ্ঞানী – এই তিনের সমন্বয়ে একটি মণ্ডল (কমিটি) গঠন করে প্রস্তাবটি পর্যালােচনার দাবি করছি। এভাবে চূড়ান্ত প্রস্তাবটি প্রস্তুত হলে সংবিধান (সপ্তদশ সংশােধন) আইনের মাধ্যমে তা গ্রহণ করার দাবি উত্থাপন করছি। এই পর্যায়ে স্মরণ করছি কনফুসিয়াসের একটি বক্তব্য : ‘যদি ভুল কর, তবে তা সংশােধনের জন্য দেরি করাে না এবং সংশােধনে লজ্জাবােধ করাে না। ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ (অনুচ্ছেদ ৭(১))' বলেই একটি নির্ভুল সংবিধানপ্রাপ্তির অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চন করা কোনাে বিচারেই সমীচীন নয়। গ্রন্থটি প্রকাশে এগিয়ে আসার জন্য মুক্তবুদ্ধি প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী ও গণমানুষের অর্থনীতিবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। শুধুই ঋণ প্রকাশে তা অপরিশােধ্য। আশা করি গ্রন্থটি ব্যবহারকারীদের প্রভূত উপকারে আসবে।