বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লেখা একটি দীর্ঘ কবিতা ‘সংশপ্তক শেখ হাসিনা’। কবিতাটি লিখেছেন দুজন মিলে। একজন তানভীর আলাদিন এবং অপরজন কাজি ফয়সল। এই কবিতাটির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার জীবন সংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ পরিবার একটি ঐতিহাসিক পরিবার। এই পরিবারটিকে ঘিরে বাঙালির নানা সংগ্রাম, ত্যাগ ও অর্জন রয়েছে। ১৫ আগস্টে জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে এই পরিবারটিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস চালিয়েছিল দেশে ও বিদেশের ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে। কিন্তু তা সফল হতে পারেনি। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা হত্যাকা থেকে বেঁচে গিয়ে শুধু নিজেরাই বাঁচেননি। তারা বাঁচিয়ে দিয়েছেন গোটা বাঙালি জাতিকে। কেননা শেখ পরিবার হত্যার মানে গোটা জাতিকে আবার একটি পরাধীন জাতি হিসেবে চিহ্নত করার পায়তারা ছিল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার নাম। তার জন্মতিথি নিয়ে এ কবিতায় লেখা হয়েছে ‘১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর/সেই শুভক্ষণ/ তোমার পদধ্বনি শুনেছিল তখন/মধুমতির জল/পদ্মা-মেঘনা-সুরমা/কর্ণফুলির কাছে /তোমর আগমনি বারতা দিয়েছে/গড়িয়ে টলমল।’ (পৃষ্ঠা ১৬) পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে নানা পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার রাজনীতিতে আগমন। গণতন্ত্র রক্ষা ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় তার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প ছিল না। তার মেধা, বুদ্ধি ও কর্মদক্ষতায় বাংলাদেশ এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। বদলে গেছে মানুষের জীবনমান। তবু সেই পঁচাত্তরের শোক আমাদের জাতিকে আজও বেদনাগ্রস্থ করে। এ কবিতার পংক্তির মধ্য দিয়ে তাই উচ্চারিত হয় “৭৫-এর কালরাতে তুমি/দেখেছো ‘জুডাস-পিটার’/পিতা, মাতা, ভ্রাতার/রক্তস্রোতে বুড়িগঙ্গা একাকার।” (পৃষ্ঠা ১৮) শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরও অনেক কাব্য রচিত হয়েছে কিন্তু এই দুই কবির কাব্য ব্যতিক্রম। কারণ এই দুই কবি শুধু কবিত্ব করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নন। তারা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মীও। ফলে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন। বাংলাদেশকে নিয়ে শেখ হাসিনার যে দূরদর্শী চিন্তা ও কাজ তার প্রশংসা শুধু দেশেই নয় বিদেশেও। উন্নয়নের গণতন্ত্র, টেকসই উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, প্রযুক্তি ও মেধাবী বাংলাদেশ নির্মাণে ও সর্বপরি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে একজন নিরলস কর্মবীর শেখ হাসিনা। এ কবিতাটির প্রতিটি চরণে চরণে তাই ধ্বনিত হয়েছে। “উন্নয়নের ঘুরছে চাকা/চলছে যে তা অবিরাম/হাজার বছর পরেও লোকে/বলবে শুধু তাঁরই নামÑ/‘সংশপ্তক শেখ হাসিনা’/গড়ে গেছেন বাংলাদেশ/জীবন্ত এক কিংবদন্তি/ছিলেন তিনি আহা বেশ...!” (পৃষ্ঠা ৪৩) তানভীর আলাদিন এবং কাজি ফয়সল এর কাব্যপ্রয়াস কাব্যপ্রেমিদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। ইতিহাস ঐতিহ্য মিথ নিয়ে নানা ধরণের দীর্ঘকাব্য থাকলেও ব্যক্তিকেন্দ্রিক, বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা এ কাব্যটির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। জীবনসংগ্রামের নানা ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে এ কাব্যের নানা ব্যাকরণ, নানা ছন্দ, অন্তমিল উপমা, চিত্রকল্পের সমাবেশ ঘটেছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে একজন শেখ হাসিনার গৌরবগাঁথা হিসেবে এ কাব্য আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এটাই প্রত্যাশা।