"বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সকল খণ্ড একত্রে)" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব বিশ্বনবী হযরত মােহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুমহান আদর্শের প্রশংসা পাক কুরআনের সূরা কাসাবের ৪ নং আয়াতে বলেছেনঃ “নিশ্চয় আপনি সুমহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।” সূরা আহযাবের ২১ নং আয়াতে আরাে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন চরিতে রয়েছে তােমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।” পবিত্র কুরআনের এ ঘােষণা অনুযায়ী বিশ্বনবী হযরত মােহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবন চরিত পর্যালােচনা করা হলে এর দুটি বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে বেশি প্রতিভাত হয়ে ওঠে। (এক) তাঁর জীবন ধারার বৈপ্লবিক আদর্শ যার ছােয়া মানব জাতির সমাজ সভ্যতায় এসেছে বৈপ্লবিক রূপান্তর। (দুই) সে আদর্শের সুষ্ঠু রূপায়নের জন্য তাঁর নির্দেশিত বৈপ্লবিক কর্মনীতি যার সুফল ভােগ করার মাধ্যমে একটি অসভ্য ও উচ্ছল জনগােষ্ঠি পেয়েছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সভ্যতা। আর ইতিহাসই এর সত্যতা প্রমাণ করেছে। দুঃখের বিষয় আজকের মুসলিম মন মানস থেকে বিশ্বনবীর পবিত্র জীবন চরিতের এ মৌল বৈশিষ্ট্য দু’টি প্রায় লােপ পেতে বসেছে। আজকের মুসলমানরা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন আদর্শকে দেখছে খন্ডিতরূপে। নেহাত একজন সাধারণ ধর্ম প্রচারকের জীবন হিসেবে। এর ফলে তার জীবন চরিতের সমগ্র রূপটি তাদের চোখে ধরা পড়ছে না। আর তার জীবনাদর্শের বৈপ্লবিক তাৎপর্যও উপলব্দি করতে পারছেন না। বস্তুত আজকের মুসলিম মানসের এ ব্যর্থতা ও দীনতার ফলে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবন চরিত থেকে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের কোন বিপ্লবাত্মক রূপান্তর ঘটানাের তাগিদও অনুভব করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের মনে রাখতে হবে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন পর্যালােচনা না করার এ কুণ্ঠাহীন উপলব্দিরই ফসল। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশাল ও ব্যাপক জীবনের খুটিনাটি বিষয়াদি এ গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য নয়। এর বিষয়বস্তু তাঁর বৈপ্লবিক আদর্শ ও কর্মনীতি। এ দুটি বিশেষ দিকেরই ওপর সবচেয়ে বেশি আলােকপাত করা হয়েছে এবং এতে জীবন চরিতের অন্যান্য উপাদান যা এসেছে শুধু প্রাসঙ্গিক বিষয় হিসেবে।