"ওয়াজ-বক্তৃতা ও ভাষণের নিয়ম-পদ্ধতি" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: নিজে জানা এবং অন্যকে বোঝানো দুটি আলাদা দক্ষতা এবং ক্ষমতা। অনেকেই অনেক কিছু জানেন কিন্তু বোঝাতে গেলে ঠিকমত মুখ দিয়ে কথা বের হয় না। তার মানে তিনি ভালো বক্তৃতা করতে পারেন না। কারও বক্তৃতা ১০ মিনিট চলার পরই শ্রোতারা বিরক্ত হয়ে উঠার জন্য এদিক সেদিক তাকাতে থাকেন। আবার কারও কথা সারারাত ধরে বসেও শুনতে ইচ্ছা হয়। তাই সুন্দর স্বরে, বুলন্দ আওয়াজে যুক্তি দিয়ে কথাবলা এবং অন্যকে বোঝানোর দক্ষতা অর্জনের জন্য চেষ্টা-সাধনা করতে হয়। মনে রাখতে হবে, বক্তৃা দেওয়ার দক্ষতা সহজে আয়ত্ব হয় না, এ জন্য কঠোর পরিশ্রম ও সাধনা করতে হয়। যিনি দ্বীনের দাওয়াত দিবেন তাকে অবশ্যই মিষ্টভাষী এবং সললিত কন্ঠের আকষর্ণীয় বক্তা হতে হবে। ভালো বক্তার দু-ধরনের গুণ থাকে। ১. বক্তা সুদীর্ঘ বক্তৃতা করতে পারেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতে পারেন, ২. আবার অনেক সমকয় উপস্থিত মুহূর্তের মধ্যে অল্প বক্তৃতা দিয়েও তিনি সমাবেশে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেন, আর মুগ্ধ করতে পারেন সকলকে। তাই সুদীর্ঘ বক্তৃতার যেমন প্রেয়োজন আছে, ক্ষুদ্র বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতারও তেমনি প্রয়োজন। যেমন কোনো সভা-সমাবেশ ও সেমিনারে প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি ও সভাপতির বক্তৃতার জন্য ১ ঘণ্টার বেশি সময় নির্দিষ্ট থাকে। অন্যান্য বক্তাদের সাধারণত সময় দেওয়া হয়া মাত্র ৫ মিনিট। যা বলতে হয় এ সময়ের মধ্যেই গুছিয়ে বলতে হয়। ভালো বক্তাগণ পূর্বে থেকে ঠিক করে রাখেন ২০ মিনিট সময় দেওয়া হলে কী কী পয়েন্ট বলবেন? আর ৫ মিনিট সময় থাকলে তার মধ্যে কী কী পয়েন্ট বলবেন। আগে থেকে ঠিক করে না রাখলে এই অল্প সময়ের মধ্যে গুছিয়ে বলা যায় না এবং বক্তৃতাও তেমন শ্রুতি মধুর হয় না। এ সকল বিষয়গুলোর উপরই আলোচনা করা হয়েছে এ গ্রন্থে। গ্রন্থটি বক্তা, শ্রোতা, আয়োজক, পরিচালক ও শিক্ষার্থী সকলেরই উপকারে আসবে বলে আমি আশাবাদী। তাছাড়া গ্রন্থটি একজন বক্তা প্রশিক্ষকের মতোই কাজ করবে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।