"আকবর দ্যা গ্রেট" বইটির সম্পর্কে কিছু কথাঃ বইটি সম্রাট আকবরের জীবনীমূলক একটি শিশুতোষ বই। বইটিতে আকবরের জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রসঙ্গ অনেক সহজ করে শিশুদের উপযোগী করে লেখা হয়েছে। যেমন, আকবর যখন সিংহাসনে আরােহণ করেন তখন ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত বিশৃঙ্খল। হুমায়ুন মৃত্যুর আগে কেবল পাঞ্জাব, আগ্রা ও দিলি উদ্ধার করে গিয়েছিলেন, কিন্তু সাম্রাজ্য সসংহত করে যেতে পারেননি। অভিভাবক বৈরাম খাঁর সহযােগিতায়। আকবর সব বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করেন। সব বিশৃঙ্খলা দমন করে আকবর রাজ্য বিস্তারে মনােনিবেশ করেন। গুজরাট, বাংলা, বিহার, কাশ্মীর ও কাবুল জয় করার পর তিনি দাক্ষিণাত্য আক্রমণ করেন। তার রাজ্য উত্তরে হিমালয়, পশ্চিমে কান্দাহার, দক্ষিণে। বেরার এবং পূর্বে বঙ্গদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন- "আকবর শাহের মাতৃভক্তি অত্যন্ত প্রবল ছিল। এমন-কি, এক সময়ে যখন তাঁহার মা পালকি চড়িয়া লাহাের হইতে আগ্রায় যাইতেছিলেন, তখন আকবর এবং তাঁহার দেখাদেখি অন্যান্য বড়াে বড়াে ওমরাওগণ নিজের কাঁধে পালকি লইয়া তাঁহাকে নদী পার করিয়াছিলেন। সম্রাটের মা সম্রাটকে যাহা বলিতেন তিনি তাহাই পালন করিতেন। কেবল আকবর শা মায়ের একটি আজ্ঞা পালন করেন নাই। সম্রাটের মা সংবাদ পাইয়াছিলেন যে পর্তুগিজ নাবিকগণ একটি মুসলমান জাহাজ লুঠ করিয়া একখণ্ড কোরান গ্রন্থ পাইয়াছিল, তাহারা সেই গ্রন্থ একটি কুকুরের গলায় বাঁধিয়া বাজনা বাজাইয়া অৰ্মজ শহর প্রদক্ষিণ করিয়াছিল। এই সংবাদে ক্রদ্ধ হইয়া সম্রাটমাতা আকবরকে অনুরােধ করিয়াছিলেন যে একখণ্ড বাইবেল গাধার গলায় বাঁধিয়া আগ্রা শহর। ঘােরানাে হউক। সম্রাট তাহার উত্তরে বলিয়াছিলেন-যে কার্য একদল পর্তুগালবাসীর পক্ষেই নিন্দনীয় সে কার্য একজন সমাটের পক্ষে অত্যন্ত গর্হিত সন্দেহ নাই। কোনাে ধর্মের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করিলে ঈশ্বরের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয়৷ অতএব আমি একখানা। নিরীহ গ্রন্থের উপর দিয়া প্রতিশােধস্পৃহা চরিতার্থ করিতে পারিব না। যেকোন মুহুর্তে যুদ্ধযাত্রার জন্য তার মজুত থাকত পাঁচশত হাতি আর মালবহনের জন্য একশত সারি ঘােড়া আর উট, প্রতি সারিতে দশটি করে।”
পরিচিতি রণক ইকরাম: কাগুজে নাম মোহাম্মদ ইকরাম-উল-করিম হলেও লেখালেখি করেন রণক ইকরাম নামে। জন্ম কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার শংকুচাইল গ্রামে। বাবা রেজাউল করিম এবং মা মনোয়ারা বেগম। কুমিল্লাতেই মাধ্যমিকের গণ্ডি টপকানো। তারও আগে লেখালেখির ভূত সওয়ার হয়। এরপর নটরডেম কলেজ আর ঢাকা ভার্সিটির গৌরবময় আঙিণা মাড়িয়ে এখন কর্মজীবনে। কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের জ্যেষ্ঠ সহ সম্পাদক পদে। সেখানে রকমারি, বিনোদন, ফ্রাইডে, শনিবারের সকাল ও ডাংগুলি পাতার ইনচার্জ এর দায়িত্ব পালন করছেন। লিখতে ভালোবাসেন বিচিত্র সব বিষয়ে। মূলত ইতিহাস, রহস্য, রোমাঞ্চ লিখতে বেশি ভালোবাসেন। তবে সবকিছুতেই সমান আগ্রহ। দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লিখে যেতে চান।