"জনসাধারণের মাঝে প্রচলিত ভুল-ভ্রান্তি" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: সময় যত গড়ায় খারাপ বিষয়গুলো ততই নবায়ন হয়, নতুন রূপে জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হয়। ইবলিশ এভাবেই মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে চলে সৃষ্টির সূচনা থেকে। তাই নবি-রাসূলদের অন্যতম একটি দায়িত্ব ছিল সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে বাধা প্রদান। নবি-রাসূলদের পর এই দায়িত্ব বর্তায় উম্মতের ওপর। আর এই কাজের দিক থেকে উম্মতে মুহাম্মাদীকে আল্লাহ্ তাআলা অনন্য করেছেন। আল্লাহ বলেন, 'তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। মানব জাতির জন্য তোমাদের অভ্যুত্থান হয়েছে, তোমরা সৎকার্যের নির্দেশ দেবে, অসৎকাজে নিষেধ করবে...' [সূরা আলি ইমরান, ১১০]
. তবুও যাপিত জীবনের বাঁকে বাঁকে প্রকাশ্যে–অপ্রকাশ্যে মানুষের ভুল হয়েই যায়। কিছু কিছু ভুল থাকে যা কেবল ব্যক্তির সাথেই সংশ্লিষ্ট, আর কিছু ভুল থাকে যা ব্যক্তির গণ্ডি ছাড়িয়ে পরিবার,সমাজ- সভ্যতার সাথে সম্পৃক্ত। জনসাধারণকে শরয়ী বিধিবিধান সংক্রান্ত ভুলত্রুটি থেকে সতর্ক করার এ দায়িত্বানুভূতি থেকেই মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. “আগলাতুল আওয়াম” নামে একটি সংক্ষিপ্ত পুস্তিকা রচনা করেছিলেন। তিনি এ জাতীয় আরো মাসআলা-মাসায়েল সংযোজন করার জন্য পুস্তিকার ভূমিকাতে আবেদন জানান। তার এ আবেদনে সাড়া দিয়ে অনেকেই এতে আরো মাসআলা-মাসায়েল সংযোজন করেন। এতে হযরত মাওলানা মাসিহুল্লাহ খান রহ.-এর শাগরিদ ও খলিফা মাওলানা মেহেরবান আলী বারতুভী নব সংযোজন শিরোনামে অনেকগুলো মাসআলা বৃদ্ধি করেছেন, যেসব ভুল ভ্রান্তি সমাজে প্রচলিত।
মাওলানা আবুল ফাতাহ্ মুহাম্মাদ ইয়াহ্ইয়া রাহ. ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানাধীন মালিডাঙ্গা গ্রামে ফরায়েযী বংশের এক আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মাওলানা মিয়া হুসাইন রাহ.। নানার বাড়ি হালুয়াঘাট, সেখানকার ‘কুতিকুরা করুয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে’থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়ন করেন। এরপর মাদরাসায় ভর্তি হন এবং ১৯৮২-৮৩ সালে তাকমিল (স্নাতকোত্তর) সমাপন করেন জামিয়া শারইয়্যাহ, মালিবাগ, ঢাকা থেকে। কওমি শিক্ষাবোর্ডের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ৪র্থ স্থান অধিকার করেন। কর্মজীবনে সিলেট জেলার গাছবাড়ী মাযাহিরুল উলূম ও জামিয়া শামসুল উলূম (পীরজঙ্গী) মাদরাসায় মুহাদ্দিস ছিলেন এবং মালিবাগ জামিয়ায় ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া আমৃত্যু বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড-এর সহকারী মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থনীতির উপরে ‘ইসলামী অর্থনীতির আধুনিক রূপায়ণ’, বেফাকুল মাদারিসের অধীনে ফযীলত ১ম বর্ষে পাঠ্য, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের উপরে ‘আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলাম’, ‘হাদীস অধ্যয়নের মূলনীতি’, ‘দারুল উলূম দেওবন্দ : ইতিহাস ঐতিহ্য ও অবদান’, (ফযীলত ২য় বর্ষে পাঠ্য), ‘স্রষ্টা ও তাঁর স্বরূপ সন্ধানে’, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে পীর-মুরিদী’, ‘মুজাহাদা ফী সাবীলিল্লাহ’সহ বহু মূল্যবান গ্রন্থ লিখে গেছেন। । তিনি ২০ মে, ২০১৭ সালে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন।