“তেরো বছর পর দেওবন্দে“ বইয়ের অনুবাদকের দুটি কথা: দেওবন্দ একটি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভারসাম্যপূর্ণ মাসলাকের নাম। যার মাঝে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কোন সুযোগ নেই। এর সাথে সংশ্লিষ্ট দ্বীনের যে কোন খেদমত করতে পারা অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করি যে, তিনি এই নগন্যকে সে খেদমতের সাথে যুক্ত রেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ! | অনুবাদের প্রেক্ষাপটের আলোচনা প্রকাশকের কথায় চলে এসেছে বিধায় এখানে আলোচনার প্রয়োজন মনে করলাম না। অনুবাদ করা অত্যন্ত জটিল কাজ। বিশেষ করে আমার মত অদক্ষের জন্য। তারপরও মুরুব্বীদের উৎসাহ, বন্ধুদের আবেদন এবং আমার জীবন সঙ্গিনীর পীড়াপীড়ির কারণেই সম্ভব হয়েছে। আল্লাহ তাআলা সকলকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন! বিশেষ করে প্রকাশক জনাব আব্দুল্লাহ জুলকারনাইন সাহেবকে। যিনি আমাকে একাজের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রিয় পাঠক! দ্রুত কাজ সম্পূর্ণ করার কারণে ভুল ভ্রান্তি হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক, তাই কোন ভুল বা অসংঙ্গতি দৃষ্টিগোচর হলে জানানোর অনুরোধ রইল। পরবর্তি সংস্করণে শুধরানোর প্রত্যাশা রইলো। আল্লাহ তা'আলা আমাদের এ খেদমতকে কবুল করুন। এখলাস দান করুন। সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম বদলা দান করুন। জাবের কাসেমী গুফিরালাহু চড়া মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা ২৫-০৫-২০১৬ইং সূচিপত্র: বিষয় প্রতিটি মানুষ সর্বদা চলমান ---- ---- ১৭ মানুষ যাকে মূল নিবাস মনে করে তা মূলত মূল নিবাসের দিকে অগ্রসরমান সফরের একটি ধাপ--- ---- ১৮ আবাসস্থল তিন প্রকার— ২২ দেওবন্দ ও দারুল উলূমের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি------২২ পাকিস্তান আন্দোলনের কারণে স্বদেশ ত্যাগ ২৩ করাচিতে অবস্থান---২৬ করাচির দিন-কাল---২৮ তেরো বছর পর মাতৃভূমির পদচরণে---২৯ সফরের অনুভূতি----৩০ মহল্লার ঘর-বাড়ির প্রতি প্রথম দৃষ্টির অনুভূতি----৩২ দেওবন্দে যা দেখলাম--৩৫ উক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যা ---৩৭ নিজের পরিত্যক্ত ঘর পরিদর্শন এবং তার অনুভূতি---৩৭ দেওবন্দে বুযুর্গদের কবরস্থানসমূহ--৪০ সর্বপ্রথম আমার মুহতারাম পিতার কবর যিয়ারত---৪১ হুজ্জতুল ইসলাম নানতুবী (রহ.) এর কবর যিয়ারত---৪২ হযরত মাওলানা আহসান সাহেব (রহ.)-এর কবর যিয়ারত--৪২ হযরত শাইখুল হিন্দ (রহ.) এর কবর যিয়ারত---৪৩ হযরত শাইখুল হিন্দ (রহ.)-এর একটি সোনালী বাণী—৪৪ হযরত মাদানী (রহ.)-এর কবর যিয়ারত----৪৫ মুফতীয়ে আযম হযরত মাওলানা আযীযুর রহমান সাহেব (রহ.)—৪৬ হযরত মাওলানা হাবীবুর রহমান সাহেব (রহ.)-এর কবর--৪৭ শাইখুল আদব হযরত মাওলানা এজায আলী সাহেব (রহ.)-----৪৮ নমুনায়ে সালাফ হযরত মাওলানা আনওয়ার শাহ (রহ.)-----৫০ হযরত হাজী আবেদ হোসাইন (রহ.)----৫১ হযরত মিয়া সাহেব (রহ.)----৫১ হযরত মিয়া সাহেব (রহ.) এর কিছু উপকারী কথা----৫২ এলাকার মুরুব্বী ও বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ--৫৩ মাওলানা হাকীম সাইয়্যিদ মাহফুয সাহেব---৫৪ দারুল উলুম দেওবন্দে উপস্থিতি----৫৫ উলামা ও ছাত্রদের মজলিস--৫৬ ফতোয়া বিভাগ এবং তার পুরনো স্মৃতি--৫৭ লাইব্রেরি-----৫৮ দারুল উলূমে একটি দরসে হাদীস---৫৮ দেওবন্দ মতাদর্শের হাকীকত---৫৯ থানাভবনের সফর-----৬১ খানকায়ে এমদাদিয়া---৬১ হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রহ.)-এর বরকত---৬৩ ষোলো বছর পর্যন্ত থানাভবনে উপস্থিতি----৬৬ থানাভবন এবং খানকায়ে এমদাদিয়ার বর্তমান----৬৭ অবস্থাহযরতের কবরে উপস্থিতি---৭০ মাজাহেরুল উলূম সাহারানপুর--৭১ দেওবন্দ থেকে পাকিস্তানের পথে--৭২ বিস্ময়কর মিল---৭৩ যমীমা----৭৪ ১নং মালফুজ --৭৫ ইমাম গাযালী (রহ.)-এর ঘটনা----৭৫ ২নং মালফুজ----৭৬ ৩নং মালফুজ---৭৬ ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) কে স্বপ্নে দেখা---৭৬ ৪নং মালফুজ----৭৬ এক তালিবে ইলমের ঘটনা------৭৬ মাওলানা আব্দুল হাই সাহেবের ঘটনা---৭৭ ৫নং মালফুজ----৭৭ ৬নং মালফুজ----৭৭ ৭নং মালফুজ----৭৭
মুফতী মুহাম্মাদ শফী (উর্দূ: مفتى محمد شفيع) ১৩১৪ হিজরী সনের শা'বান মাসের ২১ তারিখে (২৫ জানুয়ারি ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর নাম "মুহাম্মাদ শফী" হযরত রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) কর্তৃক প্রস্তাবিত। ১৩২৫ হিজরীতে (১৯০৭/১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে) তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন । তিনি ১৩৩৬ হিজরীতে (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন, তখন তার বয়স ২১ বছর ছিল। এরপর ১৩৩৭ হিজরীতে (১৯১৮/১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি খুবই তাড়াতাড়ি উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৩৫০ হিজরী সনে (১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলূম দেওবন্দের মুফতীয়ে আযম বা প্রধান মুফতী (গ্রন্ড মুফতী) নিযুক্ত হন। দেশ বিভাগের পর তিনি তাঁর পিতৃভূমি দেওবন্দ ছেড়ে পাকিস্তান চলে আসেন। তিনি ১৩৭০ হিজরীতে (১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দ) পাকিস্তানে দারুল উলুম করাচী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শত এর মত বই লেখেছেন। তার বিশ্বখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ "মা'আরিফুল কুরআন" যা বহুল ভাষায় অনুবাদ হয়েছে যা তিনি সমাপ্ত করেন (ঊর্দূতে) তার ইন্তেকালের চার বছর আগে। এই আলেমে দ্বীন ও মনীষী ১৩৯৬ হিজরী সনের শাওয়াল মাসের ১০ তারিখে ইন্তেকাল করেন।[১][২]