“আমাদের নতিপোতা গ্রামের ইতিহাস : ইতিহাস-ঐতিহ্য-প্রেম-জীবন-দূর্ভিক্ষ-প্রতিরোধ” বইটি সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ সাদা রঙের মানুষগুলোর কাছে যে দিনটা-ক্রিসমাস ডে, নতিপোতা গ্রামের মানুষগুলোর কাছে তা শুভ বড়দিন। পঁচিশে ডিসেম্বর নতিপোতার খৃস্টানদের কাছে কলাগাছই তাদের ক্রিমসা ট্রি। যদিও চব্বিশে ডিসেম্বর গভীর রাতে এসে বুড়ো সান্তাক্লজ উপহার রেখে যায় না শিশুদের জন্যে, কেউ ক্রিসমাস বক্স উপহার দেয় না, তবুও দরিদ্র এসব মানুষগুলোর মধ্যে সেই রাতে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কে কতো সুন্দর পিঠা বানিয়ে খেতে দেবে বড়দিনে বেড়াতে আসা মেহমানদের। সকালে রান্না হবে বাড়ির পোষা লাল ঝুঁটিঅলা বড় মোরগ অথবা রাজহাঁসের ঝোল তার সাথে একটু পরিষ্কার চালের ভাত। আনন্দের কমতি হয়না কোথাও। সেই ১৮৪৬ সনে এই অজপাড়াগাঁ নতিপোতার কাঁচা রাস্তার একহাঁটু কাদাজল পেরিয়ে, কলেরা বসন্ত ম্যালেরিয়া মোকাবেলা করে, সাহেবরা গড়ে তুলেছিল রোমান ক্যাথলিক চর্চা- মিশন পল্লি। এখন এসব পেছনে ফেলে ফাদাররা ফিরে যাচ্ছে যার যার দেশে, এই উনিশ চুয়াত্তরেই। মাঝখান থেকে কিছু মানুষ স্বধর্ম ত্যাগ করে বেছে নিল সাহেবদের খৃস্টধর্ম। যীতেন্দ্র হলো যোসেফ, প্রহল্লাদ হলো পিটার। নিম্নবর্গের মানুষের ইতিহাস বুঝি এমনই, শোষণে শোষণে শুধু প্রাণই নাস্তানাবুদ হয়না, ওরা ধর্মও হারায়। কিন্তু মূল মানুষটা থাকে ওই একই।
Title
আমাদের নতিপোতা গ্রামের ইতিহাস : ইতিহাস-ঐতিহ্য-প্রেম-জীবন-দূর্ভিক্ষ-প্রতিরোধ
জন্ম ৬ জানুয়ারি ১৯৫৪ সাল, মেহেরপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর গবেষণাকর্মে আত্মনিয়ােগ করেন। ১৯৭৯ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতায় যােগদান করেন ।। দীর্ঘ ১০ বছর চট্টগ্রাম কলেজে ইতিহাসের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে যথাক্রমে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও যশাের সরকারি এম এম কলেজে অধ্যাপনা করেন। ২০০৫ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি পান। স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর ঢাকায় বসবাস। শুরু করেন লেখালেখির সঙ্গে ঘরসংসার । প্রচুর লিখে চলেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলাে: গুলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প; অষ্টনাগ ষােলচিতি; পােড়ামাটির জিলাপি ও অন্যান্য গল্প; পক্ষি ও সারমেয় সমাচার। (উপন্যাস); পুষ্পরাজ সাহা লেন (উপন্যাস, শিখা। প্রকাশনী); আমাদের নতিপােতা গ্রামের ইতিহাস। (উপন্যাস); নেফারতিতি (উপন্যাস); কথা। উপকথা (উপন্যাস); রৌদ্র ও ত্রাতাগণ (মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস); বন্দিভুতের ফন্দি (কিশােরদের গল্প) ও। ছােটকু মােটকু (কিশােরদের গল্প)। হাবিব আনিসুর রহমান তার লেখায় একই সঙ্গে শােষণে শাসনে পর্যদস্ত গ্রামের প্রান্তিক জনগােষ্ঠীর। 'পােড়খাওয়া জীবন এবং পুঁজির ঔরসজাত কদর্যে। ভরা অসুস্থ উন্মাদ নাগরিক জীবনের ছবি এঁকে যান স্বেচ্ছায়, নিজ দায়িত্নে; তৈরি করেন অন্য এক। ভুবন যেখানে স্পষ্ট হয়ে ওঠে মানুষের জীবনের। প্রকৃত চিত্র। লেখালেখির জন্যে তিনি ২০১১ সালে। ‘জীবননগর সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা' এবং ২০১৫। সালে ‘কাঙাল হরিনাথ মজুমদার’ পদকে ভূষিত। হন। তিনি ভালােবাসেন বই পড়তে, লিখতে আর। 'সেতার শুনতে। সময় পেলে মুভি দেখেন।