বইটির অনুবাদকের কথাঃ সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যিনি মানবজাতির হেদায়েতের জন্য পবিত্র কুরআন প্রেরণ করেছেন এবং দরূদ ও সালাম বর্ষিত হােক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের ওপর যিনি পৃথিবীকে কুরআনের আলােকে একটি আদর্শবান জাতি উপহার দিয়েছেন। উম্মতে মুহাম্মাদীর ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের জন্য আল্লাহ তাআলা সংবিধানস্বরূপ কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করেছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত এর হেফাজতের যিম্মাদারীও তিনি নিজে গ্রহণ করেছেন। কুরআনুল কারীম আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম। তিনি যেমন শ্রেষ্ঠ ও মহান, তদ্রুপ তাঁর কালামও সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহান। যারা তাঁর কালামের অনুসরণ-অনুকরণ করবে, মহব্বত করবে, সে অনুযায়ী জীবন গঠন করবে তারাই উত্তম ও আদর্শ জাতি। চৌদ্দশ’ বছরের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যারাই এ কুরআনকে মহব্বত করেছে, কুরআনের পেছনে সময় ব্যয় করেছে, কুরআন নিয়ে গবেষণা করেছে এবং নিজেদের জীবনের সর্বস্তরে কুরআনী বিধান প্রতিষ্ঠা করেছে। তারাই উজ্জল নক্ষত্রতুল্য। বর্তমান মুসলিম বিশ্বের অন্যতম আলেমেদীন, স্বনামধন্য ব্যক্তি, পীর ও মুর্শিদ মাওলানা যুলফিকার আহমাদ নকশবন্দী দা. বা.-এর ‘খুতুবাতে যুলফিকার’ নামক গ্রন্থ থেকে বাছাই করে কুরআন বিষয়ক আলােচনাগুলােকে একত্রিত করা হয়েছে, ফলে বক্ষমান গ্রন্থটিতে কুরআনের বিভিন্ন বিষয়ের আলােচনাই স্থান পেয়েছে। যেমন-কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা, কুরআনের অলৌকিকতা, কুরআন তেলাওয়াতের উপকারিতা, কুরআনের মহব্বত এবং কুরআনের জন্য জীবন উৎসর্গকারীদের ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয়। অনুবাদ সুন্দর ও সাবলীল করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে। বক্তৃতার ভাব ঠিক রাখার জন্য অনেক স্থানে কুরআনের আয়াতের ভাবার্থ উল্লেখ করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে একই গল্পকে কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে। আবার কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে বাদ দেয়া হয়েছে যাতে গ্রন্থের কলেবর বেড়ে না যায়। আশাকরি গ্রন্থটি অধ্যয়ন করে পাঠক কুরআনী জীবন গড়ার প্রতি উৎসাহ পাবে, যেটা আমাদের ইহকাল ও পরকালের মুক্তির উপায় হতে পারে। আল্লাহ তাআলা এ গ্রন্থটিকে কবুল করুন এবং গ্রন্থটি প্রকাশে যাদের শ্রম ব্যয় হয়েছে তাদেরকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন। আমীন।
জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি (জন্ম: ১ এপ্রিল ১৯৫৩) একজন পাকিস্তানি ইসলামি পণ্ডিত এবং নকশবন্দি তরিকার সুফি। তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের ‘ঝং’ জেলায় অবস্থিত মাহদুল ফাকির আল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা। ২০১১ সালে ভারত ভ্রমণ করেন ভারতের হায়দরাবাদের ঈদগাহ বিলালী মনসাব ট্যাঙ্ক ও চঞ্চলগুদা জুনিয়র কলেজে কয়েকটি সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছিলেন। তারপরই তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। দারুল উলুম দেওবন্দের মসজিদে রশিদ এবং দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দের অনুষ্ঠানেও বক্তব্য রাখেন।