"দুনিয়া ও আখেরাত" বইটির অনুবাদকের কথা থেকে নেয়াঃ বিশ্বনন্দীত ইসলামের মুবাল্লিগ মাওলানা তারিক জামীল (দা. বা.)-এর নাম কোনাে দিক দিয়ে পরিচয় করিয়ে দেয়ার অবকাশ রাখে না। মহান আল্লাহ যেমনিভাবে তাকে অসংখ্য সৌন্দর্য্য ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন, তেমনিভাবে তাকে দান করেছেন বক্তৃতা ও ভাষণের অপূর্ব এক যােগ্যতা, সচরাচর খুব কম মানুষের মধ্যেই তা দেখা যায়। এসব গুণাবলীর সাহায্যে বিশ্বব্যাপি যে যশ-খ্যাতি অর্জন করেছেন তা সর্বস্তরের মানুষের কাছে তার মাকবুলিয়াতের জ্বলন্ত প্রমাণ বহন করে। তার বয়ানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত তথা সব স্তরের শ্রোতারা তার উপস্থাপনার কলাকৌশল ও নৈপূণ্যতায় প্রভাবিত হয়। সাদাসিধে ও স্পষ্ট কথার অকল্পণীয় ধরণ কাউকে মুগ্ধ না করে পারে না। তিনি নিজ বয়ানে কুরআন ও হাদীসের শিক্ষণীয় বিষয়গুলােকে বিশেষ পদ্ধতিতে ব্যক্ত করে থাকেন। প্রিয় পাঠক! আমরা তার বয়ানের বিশাল ভাণ্ডার থেকে কেবল দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ ও অকল্যাণের বিষয়কে তােলে ধরেছি। বয়ানের ধারাকে অনুবাদে অক্ষুন্ন রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, তবে একই কথার একাধিকবার সম্বােধনকে একবারই ব্যক্ত করে সুখপাঠ্য করার আপ্রাণ চেষ্টা করা করেছি। তিনি নিজ বয়ানের বহু স্থানে কুরআন ও হাদীসের পূর্ণাঙ্গ আলােচনা উল্লেখ না করে শ্রোতাদের বােঝার স্বার্থে কেবল প্রয়ােজনীয় অংশটুকুকে উল্লেখ করে ক্ষান্ত হয়েছেন এবং বেশিরভাগ স্থানে সেগুলাের হুবহু অর্থ বা অনুবাদ না করে ভাবার্থ করেছেন, আমরা বয়ানের বৈশিষ্ট্যকে ধরে রাখার জন্য উক্ত নিয়মেই অনুবাদ করেছি।
তারিক জামিল (যিনি মাওলানা তারিক জামিল নামে অধিক পরিচিত, জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯৫৩) একজন প্রভাবশালী পাকিস্তানি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী এবং তাবলিগ জামাতের সদস্য। ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পাশাপাশি উর্দু ও আরবিতে সাবলীল বক্তৃতা তাকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে। মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষকে তিনি প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন।[১] শিক্ষাজীবনে তিনি তাবলিগ জামাত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে নিজেকে ইসলাম শিক্ষায় নিয়োজিত করেছিলেন। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা ও শিক্ষায় অবদানের অংশ হিসেবে তিনি মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন, জামিয়া আল হুসায়নিয়া মাদ্রাসা ও মিম একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি সবসময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম জরিপে শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি দুইবার প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছেন।