“গেরিলা ১৯৭১" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ গেরিলা ১৯৭১ গ্রন্থটি মুক্তিযুদ্ধের এক মূল্যবান দলিল। নিজে একজন স্থানীয় ভাবে প্রশিক্ষিত। মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে আমার কাছে যুদ্ধের অধিকাংশ। বিবরণ মনে হয়েছে অতিরঞ্জিত, মনে হয়েছে যােদ্ধা। নিজেই নিজের স্তবকীর্তনের ফাদে নিপতিত। কর্নেল। (অবঃ) তৌফিকুর রহমানের যুদ্ধ-বিবরণী হয়ে। উঠেছে যুদ্ধ স্মৃতি রােমন্থনের এক বিকল্পভাষ্য। এই ভাষ্যেও মুখােমুখি হয়ে আমাদের মনে পড়ে যায়। আমাদের সমুদয় কৃতকর্ম সবসময় মহিমান্বিত ছিল। , বীরােচিত নয় এমন কিছুও ছিল। আর এটা কে জানে যে, যুদ্ধ সকল ক্ষেত্রেই একটি যন্ত্রণাদায়ক, দুঃসহ ও বিভীষিকাময় বৃত্তিও বটে। কর্নেল (অবঃ) তৌফিক প্রতিটি অপারেশনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। তুলে ধরেছেন, এবং যে তরুণেরা যে যুবকেরা লাভ-লােকসানের হিসেব না কষে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। তাদের সাহস ও বিক্রম চিত্রিত করেছেন শ্রদ্ধায়, যথার্থতায়, সর্বোপরি গভীর আবেগােদ্যোতিত ভাষায়। এই গ্রন্থটি পাঠ করা ছিল এক বেদনাদায়ক আনন্দের অভিজ্ঞতা অর্জনের দিকে ধাবিত রােমাঞ্চকর অভিযাত্রার সমতুল্য। এই যাত্রায় আমি টানটান উত্তেজনায় ডুব দিয়েছি। এই অভিযাত্রা বিস্মৃত যুদ্ধের স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করেছে দগদগে তীব্রতায়। এই গ্রন্থযাত্রায় চোরাগলির গর্তে পুঁতে রাখা বীর যােদ্ধাদের ঘ্রাণ মর্ম অবধি পৌছেছে। যাত্রা শেষে আমি প্রণত হয়েছি মানিক ভাই, ক্যাপ্টেন। হায়দার ও অগণিত দেশ প্রেমীর প্রতি। যে মুক্তিযুদ্ধ। রাজনীতিবিদদের বাগাড়ম্বরপূর্ণ ভাষণবাজি ও হাঁকাহাঁকি এবং ছদ্ম মুক্তিযােদ্ধাদের কেনা-বেচা ও লাভ-লােকসানের দরকষাকষির ফলে পর্যবসিত হয়েছিল নর্দমার জঞ্জালে, সেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আমার অগাধ ভালােবাসা ও সম্মান পুনর্জাগরিত করে, বােধকরি, গ্রন্থটি সর্বাধিক দায়িত্ব পালন করেছে। একাত্তর এবং একাত্তর-উত্তর উভয় প্রজন্মের জন্যই গেরিলা ১৯৭১ অবশ্য পাঠ্য।