বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া পাগলা গারদের ডাক্তাররা অবাক। সব মশা আমাকে ঘিরে ধরেছে। অন্য কারো কাছে মশা নাই। চারদিকে খবর ছড়িয়ে পড়ল আমি নাকি বিরাট কামেল মানুষ, মশা পীর। মশারা আমার কথায় ওঠবস করে। দলে দলে মানুষ আসতে লাগল তদবির নিতে। খবরের কাগজের এক সাংবাদিকও এলো আমার সাক্ষাৎকার নিতে। এরপর পাগলা গারদ কর্তৃপক্ষ আমারে নিয়া ডাক্তারদের জলসা বসাল। ঢাকা থেকে বড় ডাক্তার এলো। বিদেশ থেকেও একজন এলো। সাদা চামড়ার ডাক্তার। সে নাকি বিরাট পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ। আমারে তারা আতশ কাঁচ দিয়ে পরীক্ষা করার মতো করে পরীক্ষা করল। রিপোর্ট নিয়ে সাদা ডাক্তার আমারে একটা মলম ধরায়ে দিল। দিনে দুই বার সারা শরিলে মাখতে হবে। বিদেশি মলম। কি কমু বাবাজি সেই মলমের কথা। মলমের মুখ খুলতেই শুধু মশারা না, মানুষজনও আমার কাছ থেকে পালাল। এমন দুর্গন্ধ জিনিস আমি আমার জীবনে শুকি নি। তারপর আর কি? কাপড় দিয়া নাক-মখ বাইন্ধা সারা গায়ে মলম মাখলাম। আহারে কি শান্তি! মশা মাছি কিছুই নাই। আরামে আমার চোখ দুটো আপন ইচ্ছায় বন্ধ হয়ে এলো। সে কি ঘুম! গায়ে মলম দিয়েছিলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে আর ঘুম থেকে উঠলাম শনিবার সকালে। এরপর মশারা আমারে ছেড়ে সাদা চামড়ার পতঙ্গ বিশেষজ্ঞকে আক্রমণ করেছিল। সে কি আক্রমণ! আমি এক দৌড়ে সাবের কাছে গিয়ে মলমের অর্ধেক তার শরিলে লাগাইলাম। তারপর হাসপাতালের লোকজন বড় মশারি টাঙ্গাইল। আমি আর ডাক্তার সাহেব ঢুকলাম সেই মশারির ভিতর। ডাক্তার সাহেবের শরিলে তখন একটা আন্ডার প্যান্ট ছাড়া আর কিছুই নাই। মাথার চুল এলোমেলো, চশমার একটা ডাণ্ডা ভাঙা। মশারা তারে ফুলাইয়া ফালাইছে। সারা শরিল চুলকাইতে চুলকাইতে সে তার জামা কাপড় ছিঁড়ে ফালাইছে। সে পাগলের মতো সারা শরিল হাচড়াইতেছে আর বিড়বিড় করে কি যেন কইতেছে। আমি তারে কইলাম, ভাইজান কি ইংরেজিতে দোয়া দরুদ পড়তাছেন? সে আমারে কোনো উত্তর দিল না। শুধু কয়েক বার মাথা নাড়াল। আমি বুঝলাম না সে আমারে হ্যাঁ কইল নাকি না কইল।