অনন্য ব্যক্তিত্ব আহমদ শরীফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক অনেক প্রাচীন পুথির পাঠোদ্ধার-সম্পাদনার পাশাপাশি প্রভূত পঠন-লিখনের মাধ্যমে বাংলা ভাষা-সাহিত্য এবং ইতিহাসের নানা তথ্য উদ্ধার ও পেশ করেছেন। এর ফলে আমাদের অতীতের সাহিত্য-সংস্কৃতির অনেক আলো-আঁধারি অঞ্চল আলোকিত হয়েছে। তাঁর আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাজভাবনা আমাদের সাহিত্য ও ইতিহাসকে নতুনভাবে দেখতে প্রণোদিত করেছে। বুদ্ধিজীবী হিসেবেও তিনি নিজেকে অনুসরণীয় করে তুলেছিলেন। দেশ-জাতির সকল ক্রান্তিলগ্নে অকুতোভয়-অকুণ্ঠ হয়ে দিশা দিয়েছেন—লিখেছেন পত্রিকা-পুস্তকে, চলেছেন মিছিলে, কথা বলেছেন মাঠে-মঞ্চে। প্রচলিত ধর্ম-আচারে অবিশ্বাসী, আত্মস্বীকৃত নাস্তিক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী-ঘোষিত মুরতাদ আহমদ শরীফের জীবন ও কর্ম তাঁর নিজের ভাষায় 'কূর্মস্বভাবী'। নিঃসন্দেহে তিনি বাঙালিদের মধ্যে ব্যতিক্রমী ও তুলনারহিত। ভক্তের স্তাবকতা ও বিরুদ্ধবাদীর নিন্দাবাদ এড়িয়ে বর্তমান গ্রন্থে এই মনীষীর সেই অনুপম জীবনবৃত্ত অঙ্কন ও সামগ্রিক মূল্যায়ন উপস্থাপন করা হয়েছে। গ্রন্থটি শিক্ষক-লেখক মাসুদ রহমানের পিএইচ.ডি অভিসন্দর্ভ। তবে পুস্তকাকারে মুদ্রণের সময় তিনি ঈষৎ পরিবর্ধন করেছেন বলে জানিয়েছেন ‘লেখকের নিবেদন' অংশে। ফলে বইটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রণালি থেকে উত্তীর্ণ এবং সর্বগ্রাহ্য পাঠ্য হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া বইটির প্রথম প্রকাশনা নিঃশেষ হয়েছে, বিধায় সংশোধন-সংযোজনে সমৃদ্ধতর করা হয়েছে এই নতুন সংস্করণ। পাঠকপ্রিয়তার কারণও নিশ্চয় বইটির বিষয় ও উপস্থাপন-গুণ ।
জন্ম ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৭০, কুষ্টিয়া শহর। পিতা মোঃ আতিয়ার রহমান। মাতা মোছাঃ হাজেরা খাতুন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছেন পিএইচ.ডি উপাধি।