"খলিল ও ভূত রাজকন্যা চম্পাবতী" বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেয়াঃ খলিল বলতে লাগল, আন্টি খালি বলেন- কোন শালার ভাই নােভাকে উত্যক্ত করে। নাম বলেন খালি, আমি খলিল যদি ঐ শালার সলিল সমাধি না ... See more
"খলিল ও ভূত রাজকন্যা চম্পাবতী" বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেয়াঃ খলিল বলতে লাগল, আন্টি খালি বলেন- কোন শালার ভাই নােভাকে উত্যক্ত করে। নাম বলেন খালি, আমি খলিল যদি ঐ শালার সলিল সমাধি না করছি তাইলে আমার নাম আর খলিল না, আমার নাম রাখবেন ‘গাধা। নােভার মা চোখ ছােট করে খলিলকে আপাতমস্তক দেখলেন। এরপর উদাস গলায় জবাব দিলেন, তােমার নাম পাল্টালে কী হবে বাবা? গাধার নাম ঘােড়া রাখলে তাে আর সে ঘােড়া হয়ে যায় না!
রাসয়াত রহমান হচ্ছে ভাল নাম, ডাক নাম জিকো। জন্মস্থানর ঢাকা শহরে বেইলিরোডে। প্রথম স্কুল-বেইলি প্রিপারেটরী স্কুল । ক্লাস ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল । কলেজ ছিল ঢাকা কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থ বিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনান্স থেকে এমবিএ (ইভিনিং) করেছেন। ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরী শুরু করেছেন ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মা-বাবা দুজনেই গত হয়েছেন। স্ত্রী মাকসুদা আজীজ ও একমাত্র সন্তান অর্হ অপরাজিতা রাসয়াতকে নিয়েই তার পরিবার । মানুষ হিসেবে তিনি কখনো খুব গম্ভীর কখনো খুবই মজার
যেহেতু এটা খলিল সিরিজের বই, সেহেতু প্রথমেই খলিলের পরিচয় দেয়া দরকার। লেখক তার ভূমিকায় লিখেছেন, খলিল কোনও দূর্বোধ্য চরিত্র না, কোনও অতিমানব না। একটি সাদাসিধা, বোকাসোকা, ভালো ছেলে খলিল। খলিলের জীবনের একটাই লক্ষ্য। একটি ভালো গার্লফ্রেন্ড যোগাড় করা এবং তাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন সাজিয়ে বিয়ে করা।
এবার খলিল সম্পর্কে আমি দু একটা কথা বলি। মানে বইটি পড়ার পর খলিল সম্পর্কে আমার যে ধারণা হয়েছে তা। খলিল হচ্ছে পৃথিবী নামক গ্রহের সবথেকে দুর্ভাগা প্রাণী। সে যাই করুক না কেন মানুষ তাকে ভুল বুঝবেই। কারন, খলিল তো খলিলই। আপনি বা আমি যে কথাটা সহজ করে বলি, সেটা সে সেভাবে বলতে পারবেনা। সে একটু ঘুরিয়ে বলে, এবং একারণেই ভালোকাজ করতে গিয়েও মানুষের মার খেতে হয়। উদাহারণ দেই ছোট্ট দুটা
১. একবার রাস্তা দিয়ে এক পেটিসওয়ালা যাচ্ছিল, তাকে ডাকতে গিয়ে মার খেতে হল খলিলের। কেন? পেটিসওয়ালারা দেখবেন “অ্যাই হট পেটিস, অ্যাই হট পেটিস” এভাবে ডাকতে ডাকতে যায়। আমরা যদি পেটিস মামাকে ডাক দেই, কিভাবে দিব? ঐ পেটিস, এভাবে না? কিন্তু খলিল ডাক দিল, ঐ হট, ঐ হট...... ঠিক ঐ মুহূর্তে খলিল এবং পেটিসওয়ালার মাঝ দিয়ে একটা সুন্দরি মেয়ে হেটে যাচ্ছিল,... বাকিটা বুঝে নেন :D
২. খলিলের মা এলাকার একটা কমিটির প্রধান। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি। সেই কমিটিতে একদিন খলিলের নামেই বিচার আসলো। খলিল নাকি বুয়াকে কু-প্রস্তাব দিয়েছে। অথচ ঘটনা ভিন্ন রকম। খলিল ও বুয়া একই লিফটে নিচে নামতে চেয়েছিল। কিন্তু বুয়ার কাপড় লিফটের দরজার সেন্সরে লেগে থাকায় দরজা লাগছিল না। খলিল শুধু বলেছিল, কাপড় সরান :D
যাইহোক, আলোচনায় ফিরে যাই। পুরো বইটাই এরকম অসংখ্য হাস্যরসাত্মক ঘটনা দিয়ে ভরপুর। প্রথম দিকে কাহিনীর কোনও ধারাবাহিকতা নেই। একেক সময় একেক জায়গা থেকে খলিলের বিভিন্ন ঘটনার কথা বলা হয়েছে। বইয়ের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে একটা কাহিনী শুরু হয়েছে। ভূত রাজকন্যা চম্পাবতীর সাথে খলিলের প্রেমঘটিত কাহিনী। এও সম্ভব? যে খলিল কিনা সারাজীবনে একটাও প্রেম করতে পারেনি, যে কিনা সবসময় মেয়েদের খালি প্রপোজ করেই গেছে, প্রতিবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সে করবে প্রেম? তাও আবার ভূত রাজকন্যা চম্পাবতীর সাথে? নিশ্চয় মাঝখানে কোনও কাহিনী আছে। জ্বি, ঠিক ধরেছেন। মাঝখানে চমৎকার একটা কাহিনী আছে। পড়লে হতাশ হবেন না।
লেখক খলিল সিরিজ শুরু করেছেন তার বন্ধু খলিলের কথা মাথায় রেখে। সেজন্যে চরিত্রগুলো আপনাদের হয়তো খুব পরিচিত মনে হতে পারে। বর্ণনাগুলো উত্তমপুরুষে লেখকের নিজের জবানীতে বলা হয়েছে। এই বইটি পড়তে গিয়ে আমার বার বার শীবরাম চক্রবর্তীর কথা মনে হয়েছে। একমাত্র শীবরামের বই পড়েই এতটা হেসেছিলাম এর আগে। এবার খলিল সিরিজের বই পড়ে হাসলাম। যদি মনে করেন অনেকগুলো জোকসের সমষ্টি এই বই, তাহলে ভুল করবেন। হাস্যরসের মাঝেও খুব চমৎকার একটা কাহিনী আছে। আছে প্রেম এবং বন্ধুত্বের কথা।
লেখকের সাথে আমার পরিচয় ২০১৬ এর বইমেলায়। তখনও আমি তার কোনও বই পড়িনি। তারপর আমাদের গ্রুপের মিলনমেলায় এসেছিলেন অতিথী হয়ে। তারপর থেকে পরিচয়টা বাড়লো। ফেসবুকে তার স্ট্যাটাসগুলো নিয়মিত পড়তাম। বর্তমান সময়ের লেখকদের মধ্যে উনাকেই আমার সবথেকে বেশি হিউমারাস মনে হয়। যখনই ফেসবুকে দেখলাম এবারের বইমেলায় খলিল সিরিজের বই বের হবে, তখন থেকেই ইনবক্সে নক দিয়ে দিয়ে তাকে ব্যতিব্যস্ত করে তুললাম। আমার আবদার ছিল, সবার আগে যেন বই আমি হাতে পাই। তিনি কথা রেখেছেন। সবার আগে আমিই পেয়েছি। এবং সবার আগে আমিই রিভিউ দিচ্ছি।
লেখকের কাছে আমার অনুরোধ এই সিরিজটি যেন তিনি কন্টিনিউ করেন। কাঠখোট্টা থ্রিলার পড়তে পড়তে যখন রিডার্স ব্লকে থাকব তখন খলিলকে নিয়ে বসব। শুভকামনা জিকুব্বাই :p
ছোট্ট একটা কনভার্সেশন শেয়ার করি। জিকুব্বাই খলিলকে জিজ্ঞেস করছে, - নোভার সাথে যখন তোর দেখা হয় তখন নোভা তোকে কিছু বলেনি?
- হ্যাঁ বলেছে
- কি বলছে?
- বলেছে, খলিল ভাই আপনি একটা ছাগল
- নোভা মেয়েটা ভালো রে, সবসময় সত্যি কথা বলে
Read More
Was this review helpful to you?
By Tultul Zabin,
23 Oct 2017
Verified Purchase
‘খলিল ও ভুত রাজকন্যা চম্পাবতী’ বইটির লেখক এর নাম রাসয়াত রহমান । তার দাক নাম জিকো । তিনি একজন লেখক , যে নিজে ইচ্ছা হয় যখন তখন লিখেন , কি লিখবেন কেন লিখবেন চিন্তা না করেই লিখেন । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছেন । এবং সেখান থেকেই ফিন্যান্স থেকে এম বি এ করেছেন । বর্তমানে রাসয়াত রহমান জিকো একটি ব্যাংকে চাকরি করছেন । তিনি খলিল সিরিজ এর বই লিখেন । তার লেখা খলিল ও ভুত রাজকন্যা চম্পাবতী বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় চৈতন্য প্রকাশনী থেকে এবং এর প্রকাশক জাহিদুল হক চৌধুরী রাজিব । প্রচ্ছদ করেছেন রীশাম শাহাব তীর্থ । এবার খলিল সম্পর্কে আমি দু একটা কথা বলি। মানে বইটি পড়ার পর খলিল সম্পর্কে আমার যে ধারণা হয়েছে তা। খলিল হচ্ছে পৃথিবী নামক গ্রহের সবথেকে দুর্ভাগা প্রাণী। সে যাই করুক না কেন মানুষ তাকে ভুল বুঝবেই। কারন, খলিল তো খলিলই। আপনি বা আমি যে কথাটা সহজ করে বলি, সেটা সে সেভাবে বলতে পারবেনা। সে একটু ঘুরিয়ে বলে, এবং একারণেই ভালোকাজ করতে গিয়েও মানুষের মার খেতে হয়। যাইহোক, আলোচনায় ফিরে যাই। পুরো বইটাই এরকম অসংখ্য হাস্যরসাত্মক ঘটনা দিয়ে ভরপুর। প্রথম দিকে কাহিনীর কোনও ধারাবাহিকতা নেই। একেক সময় একেক জায়গা থেকে খলিলের বিভিন্ন ঘটনার কথা বলা হয়েছে। বইয়ের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে একটা কাহিনী শুরু হয়েছে। ভূত রাজকন্যা চম্পাবতীর সাথে খলিলের প্রেমঘটিত কাহিনী। এও সম্ভব? যে খলিল কিনা সারাজীবনে একটাও প্রেম করতে পারেনি, যে কিনা সবসময় মেয়েদের খালি প্রপোজ করেই গেছে, প্রতিবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, সে করবে প্রেম? তাও আবার ভূত রাজকন্যা চম্পাবতীর সাথে? নিশ্চয় মাঝখানে কোনও কাহিনী আছে। জ্বি, ঠিক ধরেছেন। মাঝখানে চমৎকার একটা কাহিনী আছে। পড়লে হতাশ হবেন না। যারা হাস্য রসে ভরপুর কোন বই পড়তে চাচ্ছেন , খলিল সিরিজ তাদের জন্যই । লেখক এর সৃষ্ট চরিত্র খলিল আপনাকে হাসির সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত । অসাধারন রম্য গল্পের বই চাইলে পড়তে হবে খলিল ও ভুত রাজকন্যা চম্পাবতী বইটি ।
Read More
Was this review helpful to you?
By Damien Thorne,
29 Jan 2017
Verified Purchase
একটা বই পড়লে সেইটা নিয়ে স্পয়লার বিহীন রিভিউ লেখা আমার জন্য খুবই কষ্টকর। সেইটা যদি আবার হয় খলিল সিরিজ। তাই শুধু এটুকু বলি, যারা হাসির বই পছন্দ করেন এবং হাসির বই এর ভিতরে যুক্তিতর্ক খুঁজে অযথা মজা নষ্ট করেন না, তাদের জন্য মাস্ট রীড। যে সময় টা ব্লগে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতাম সে সময়ে আমার সবচেয়ে পছন্দের সিরিজ ছিল এই খলিল। আইন্সটাইন, চম্পাবতী, লিমাদেব, ভিকারুন্নেসা স্কুল, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার কার সাথে বেকায়দায় পরে নাই খলিল? সেই ইমোশনাল খলিল নিয়ে এবার বই ! না পড়লে মিস হয়ে যাবে যে! বইমেলার জন্য অপেক্ষা না করতে চাইলে আগেই কিনে ফেলুন প্লিজ।