"গণতন্ত্রের অমসৃণ পথ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: গণতন্ত্রের কথা সবাই বলে, মনে হয় সবাই চায়ও। কিন্তু সত্যি সত্যি চায় কি? না, দেশের শাসক শ্রেণী চায় না; তবে সাধারণ মানুষ চায় । ফলে দুই পক্ষে দ্বন্দ্ব বাঁধে। মুস্কিলটা এখানেই । শাসক শ্রেণী যে গণতন্ত্রের কথা বলে সেটা হলাে ভােটের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের । অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জন্য গণতন্ত্র হলাে মুক্তির পথ । স্পষ্ট করে না হলেও তারা বােঝে গণতন্ত্রের জন্য প্রয়ােজন অধিকার ও সুযােগের সাম্য । আসলে তাদের ঈঙ্গিত ব্যবস্থাটাই হচ্ছে প্রকৃত গণতন্ত্র । শাসক শ্রেণী বিশ্বাস করে পুঁজিবাদে, তাদের লক্ষ্য হলাে পুঁজিবাদী ব্যবস্থাটাকে টিকিয়ে রাখা। গণতন্ত্রের পথকে তাই তারা নানা ধরনের প্রতিরােধ, বিভ্রান্তি ও নিষ্পেষণের মধ্য দিয়ে অমসৃণ করে রাখতে চায় । সাধারণ মানুষের চেষ্টা বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়া। এ বইতে অমসৃণতার কিছু ক্ষেত্র ও দৃষ্টান্ত নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে। সেই সাথে এসেছে মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলনের কথাটাও । লেখকের উপস্থাপনা হৃদয়গ্রাহী, ভাষা সর্বদাই প্রবহমান। তিনি অঙ্গীকার নিয়ে লিখেছেন, তাঁর লেখায় তত্ত্ব আছে, কিন্তু তত্ত্বের গুরুভার নেই । পরিচিত ঘটনা ও অভিজ্ঞতায় তাঁর লেখা নতুন হয়ে উঠেছে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।