গ্রামের স্কুলে পড়া একটা ভালো ছাত্র স্বপ্ন দেখে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। নটরডেম কলেজের ছেলেটা হয়তো এমআইটি বা হার্ভার্ডে পড়তে চায়। আমার এক সময় খুব ইচ্ছে ছিলো এস্ট্রোফিজিক্স পড়ব. . . হয়নি। একটা বিশ্ববিদ্যালয় হবে যেটা কিনা মহাকাশে। সেটা ভাসবে, ঘুরবে । সেখানকার ছেলেমেয়েরা বই নিয়ে ছুটবে ,গবেষণার জিনিসপত্র নিয়ে ছুটবে। বিভিন্ন গ্রহে তাদের এ্যাকশন রিসার্চ পরিচালিত হবে। সেখানে প্রেম থাকবে, রোবটদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা যেহেতু ভাবিনা সেহেতু সেখানে চোখে চোখ পড়লে মেয়েটা একটু লজ্জা পাবে তা আমি আশা করি। ছেলেটা প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে দুবার ভুল করবে তা আমি চাই। আমি রোবট যেমন চাই না, বেহায়া মানুষও চাই না। রোবট হলো বেহায়া। একে কষে একটা লাথি দিলে সে সাথে সাথে লাথির কারণে উৎপন্ন বল হিসেব করতে লেগে পড়বে। ইউরেনাস গ্রহকে কেন মনে হয়েছিল একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো জায়গা? আসলে এই গ্রহটা নয়, মূলত এর কক্ষপথটা একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যদি আমরা এই সৌরজগতের বাইরে যেতে চাই তাহলে সে যাত্রা ইউরেনাসের থেকে শুরু হলেই কস্ট ইফেক্টিভ হবে। এটা একদম কর্নারে একটা জায়গায়, সেখান থেকে বহির্দুনিয়া আরো ভালো দেখা যাবে, আবার সৌরজগতের ভেতরে ঢোকা যাবে দ্রুত। এর কিছু উপগ্রহ আছে সেগুলোর বায়ুমন্ডল আছে, বেশ ভালো। সুতরাং বাস্তবে প্রাণ থাকুক বা না থাকুক সেখানে কল্পনার একটা এলাকা, একটা বিশ্ববিদ্যালয়, কিছু গবেষণা, কিছু প্রাণ, কিছু বেহায়া রোবট, বিপথে চলে গেছে এমন মানুষ আর মানব মানবীর মধ্যে প্রেম তৈরী করতে আমাকে আর কে ঠেকায়!! জিকো একসময় বুয়েটে পড়ত, তার সুযোগ হয় ইউনিভার্সিটি অব ইউরেনাসে পড়ার। মহাকাশ যানে করে সে যাবে সেখানে। সে দারূণ এক্সাইটেড। কম্পিউটারে যারা গেমস খেলেন, রকেট চালান, গুলি করে উড়িয়ে দেন এ্যালিয়েন ফোর্সেস তাদের বলি- গেমস এর রকেট এবং বাস্তবের রকেটের মধ্যে যে কতো পার্থক্য তা বুঝতে পারলে শুধু জীবন না মৃত্যুটা স্বার্থক হয়ে যাবে। রকেট যখন যাত্রা শুরু করে জিকোর মনে হচ্ছিল তাকে কোন একটা ব্লেন্ডারে ঢোকানো হয়েছে। তার ওজন কমে গেছে, নিজের কানে মধ্যে কোন কিছু ঢুকে সেটা মাথায় চলে গেছে, গা গুলিয়ে সে কয়েকবার বমি করে। তারপর অবশ্য ঠিক হয়। এবং একদিন সে পাক্কা ঘোরসোয়ার হয়ে যায়। ইউনিভার্সিটি অব ইউরেনাসে অলিভিয়া নামে এক মেয়ে আছে। তার প্রেমে ফেলে দিয়েছি জিকোকে। লেখক হিসেবে এই কাজটা আমি খুব সচেতনভাবেই করি। প্রেমে পড়ার সুযোগ থাকলে চরিত্রকে প্রেম থেকে কেনো বঞ্চিত করব? অলিভিয়া দেখতে সুন্দর না খুব একটা। আমি লেখক হয়ে আমার উপন্যাসের চরিত্র জিকোকে বুঝিয়েছি - সৌন্দর্য মনের ব্যাপার। মেয়েটা ভালো, তাকে ভালোবেসে ফেলতো ভাই। মেয়েটা মানব সভ্যতাকে বাচানোর জন্য লড়ছে। তার রক্তে ভিলেন গুলো এক ধরনের হরমন আর মাইক্রো রোবো ভেসেল ঢুকিয়ে দিয়েছে। একটু চেষ্টা করে দেখ। আমি দেখলাম, জিকো তার প্রেমে পড়ল। সত্যিই বলতে কি- আমি একটা মানব মানবীর প্রেম তৈরী করেছিলাম। কিন্তু এরা দুজন ঐ নরকের সবগুলো বন্দী মানুষকে বাচাতে এভাবে এগিয়ে এসেছে যে তা রীতিমত মানব প্রেমে রূপ নিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টা নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি এটাতো জানলেন। কিন্তু বই এর মধ্যে সেই স্বপ্নটা আসলে দেখতো মহান বিজ্ঞানী রাশা। বিশ্বের সব সরকারের সাহায্য নিয়ে সে তৈরী করে সেই স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তাকে এক দুষ্টু বিজ্ঞানী ডেক্স বন্দী করে ফেলে। ডেক্স এর নেতৃত্বে তৈরি হয় নরকপুর। রাশাকে মুক্ত করতে হবে, আবার বাঁচিয়ে তুলতে হবে "ইউনিভার্সিটি অব ইউরেনাস "।
সহস্র সুমন। জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামে। বাবা মো: শাহজাহান আলী, মা মোছা কোহিনূর খাতুন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কর্মজীবন শুরু করেছিলেন দেশ টিভিতে সাংবাদিকতা দিয়ে। কিন্তু তা বেশি দিন ভালো লাগেনি। তারপর রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগ দেন। সেখানে কিছু দিন কাজ করার পর ৩৪ তম বিসিএস এ প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। বর্তমানে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন। পেশাগত জীবনে বৈচিত্র তিনি চান, তেমনি লেখালেখিতেও চান এক ধরণের রোমাঞ্চ। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজ আত্মার খোরাক হিসেবে লেখালেখিটা চলছেই।