"শুরু হোক হিমালয়" বইটির দুটি কথা অংশ থেকে নেয়াঃ ‘পাগল নাকি!' – চার বছর আগে রাহীর কান্ট্রি সাইক্লিং পরিকল্পনা শুনে ঠিক এমনটাই ভেবেছিলাম আমি। ঢাকায় নিয়মিত সাইকেল চালাচ্ছে মাত্র ছয়-সাত মাস। এরই মধ্যে হাজার কিলােমিটার সাইক্লিং করতে চায় তাও উত্তরবঙ্গের কনকনে শীতে, যখন তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রীর নিচে নেমে যায়। তবে মাত্র আট দিনের ব্যবধানে সে আমাকে ভুল প্রমাণ করল। বলতে বাধা নেই; রাহীর পাগলামাে আমাকে আরেকবার মনে করিয়েছে, চাইলেই আমরা সামর্থ্যের সীমাকে আরেকটু বাড়িয়ে নিতে পারি। কালের বিবর্তনে আজ আমরা এক প্রাণহীন সভ্যতায় এসে পৌছেছি, যেখানে সব কিছুই ছকে বাঁধা। মনের বয়সের থেকে শরীরের বয়স আজ বেশি অর্থবহ। বিলবাের্ডে বড় বড় হরফে লেখা দেখা যায় : “আপনি কি চল্লিশ পেরিয়েছেন? তাহলে এক্ষুনি আপনার চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন!” কি দুর্ভাগ্য। মানব সামর্থ্যের কি নিদারুণ অবমূল্যায়ণ। ইতিহাস বলে যে মানুষ কঠোর শারীরিক পরিশ্রমে অভ্যস্ত। শুরুতে তাে আমরা পুরােদস্তুর শিকারী ছিলাম। এইতাে কিছুদিন আগেও আমরা ঘাম ঝরিয়েছি ফসলি জমিতে। শিল্প বিপ্লবের পর, বিশেষত মেধা নির্ভর অর্থনীতি বিকাশের পর আমরা যেন ভুলতে বসেছি যে, সুস্থ শরীর ছাড়া কিছুতেই মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব নয়। আজকের চেয়ার সর্বস্য অলস লাইফ স্টাইল ক্রমেই আমাদের মেধার সক্ষমতার ক্ষতি সাধন করছে। পুরােদস্তুর কর্পোরেট হওয়া সত্ত্বেও রাহী প্রথাগত আটপৌড় জীবনকে চ্যালেঞ্জ করেছে। তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ সাইক্লিং ছিল তার একটিভ লিভিং-এর প্রথম সােপান। কিছুদিন আগেও সে মালয়েশিয়াতে ক্ৰসকান্ট্রি সাইক্লিং করে এসেছে। এর বাইরে মাইক্রো-এডভেঞ্চার নিয়ে কাজ করছে বেশ কিছুদিন। রাহী দেখিয়েছে কিভাবে পরিশ্রমী জীবনযাপন করতে হয় যা আপনার শরীর ও মনকে চনমনে রাখতে টনিকের মতাে কাজ করে। “শুরু হােক হিমালয়” বইটি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে বেশ স্পর্শ করেছে।