[ এগনিস মিডোস - টেনডো তাইজিন - জয়েস অ্যাসউনটেনটেঙ - ইউরি জামব্রানো - ইব্রাহিম এলমাসরি - মিয়াও-ই তু - মারিও মাথোর ] কোলরিজের মতে ‘শব্দের উৎকৃষ্ট বিন্যাস গদ্য আর উৎকৃষ্ট শব্দের উৎকৃষ্ট বিন্যাস পদ্য।’ আধুনিক বিশ্বের এই উৎকৃষ্ট শব্দের গতিধারা কোনদিকে যাচ্ছে অথবা সমকালীন কবিতার রূপ কেমন অবশ্যই আজ তা সবারই আগ্রহের বিষয়। পারিপার্শ্বিক অবস্থান ভিন্ন হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সেরা কবিদের কাব্যভাষার এক অভিন্ন রূপ পরিলক্ষিত হয়। সমকালীন বিশ্বে এ কথার যথার্থতা পাওয়া যায়। অন্তত অনুবাদকৃত কবিদের কবিতা পড়লেই তা বোঝা যায়। বুদ্ধি মননের ভিন্নতা সত্ত্বেও বিষয় উপস্থাপন অথবা এগিয়ে যাওয়া একই দিকে। পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত যেন এ কথার প্রতিধ্বনি। জার্মান কবি রাইনার মারিয়া রিলকে বলেছেন ‘অনুবাদ হচ্ছে নির্ভেজাল উপায় যার মাধ্যমে কবিতা রচনার দক্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায়।’ দক্ষতা প্রমাণের জন্য নয়, ভালোলাগা থেকে এই অনুবাদের প্রয়াস। যদিও রবীন্দ্রনাথ নিজে বলেছেন ‘ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদ অত্যন্ত দুঃসাধ্য।’ এই দুঃসাধ্য কাজ করতে যেয়ে বারবার মনে হয়েছে কবির প্রতি অবিচার যেন করা না হয়। যদিও আবারও রবীন্দ্রনাথ স্মরণ করিয়ে দেন ‘দুই সম্পূর্ণ বিভিন্ন ভাষার মধ্যে কথায় কথায় অনুবাদ চলতেই পারে না। ইংরেজী ও বাংলা দুই ভাষায় প্রকাশের প্রথা স্বতন্ত্র এবং পরস্পরের মধ্যে শব্দ এবং প্রতিশব্দের অবিকল মিল পাওয়া অসম্ভব, এই কথাটি তর্জমা করতে গিয়ে যতই আমাদের কাছে ধরা পড়ে ততই উভয় ভাষার প্রকৃতি স্পষ্ট করে বুঝতে পারি।’
Aminur Rahman- আশির দশকের বাংলাদেশের অন্যতম কবি, অনুবাদক, শিল্প সমালোচক ও প্রবন্ধকার। ১৯৬৬ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ থেকে এম-ফার্ম ডিগ্রী লাভ করেছেন। বাংলা ভাষায় ছয়টি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বাসী করতলে (১৯৮৯), হৃদয়পুরে ডুবসাঁতার (১৯৯১), ঠিকানা: কবিতাদীঘির পার (২০০৩), ভালোবাসা ও অন্যান্য কবিতা (সিডি সহ) (২০০৩), প্রেমের কবিতা (২০০৬), কষ্টের সেটে প্রেমের ফসিল (২০১২)। লন্ডনের আক আর্টস থেকে প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজী অনুবাদ গ্রন্থ লাভ অ্যান্ড আদার পোয়েমস্ (২০০১), দু’টি স্প্যানিস অনুবাদ গ্রন্থ লা স্কুলতুরা (২০০২), মাতামে (২০১১), জার্মান অনুবাদ গদিচে ভন আমিনুর রহমান উনদ মেনফ্রেড কোবো (২০০৩), জাপানী ভাষায় লাভ পোয়েমস্ (২০০৫) মঙ্গোলিয়ান ভাষায় হার্ট শোর (২০০৬)। অনুবাদ করেছেন জাপানী ভাষার কবি কাজুকো শিরাইশীর কবিতা (২০০৩), সুদীপ সেনের একটি খালি চিঠি (২০০০), পিটার হর্ণের কবিতা (২০০৩), জি মেন্দোয়োর কবিতা (২০০৬), পৃথিবীর সেরা সমকালীন ১০ কবির কবিতা (২০১০), জার্মেন ড্রুগেনব্র“ট এর কবিতা (২০১২), প্রকাশিত হয়েছে আবৃত্তি বিষয়ক প্রবন্ধমালা (সম্পদনা) (২০১০), প্রবন্ধ গ্রন্থ বাংলাদেশের চিত্রকর ও চিত্রকলা (২০১২)। সমকালীন বাংলা কবিতা আবৃত্তির সাতটি ক্যাসেট/সিডি প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রথম ভিডিও আবৃত্তি সিডি নিভৃতি নির্ভরতা (১৯৯৮)। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা সম্পাদনা এবং প্রকাশনার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। আমন্ত্রিত কবি হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিল্প ও সাহিত্য উৎসব, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তাঁর কাজ উপস্থাপন করেছেন। বিশ্ব সাহিত্যে অবদানের জন্য মঙ্গোলিয়ার চেঙ্গিস খান ইউনিভার্সিটি তাকে চেঙ্গিস খান গোল্ড মেডেল, মালয়েশিয়ার কমপেরাটিভ লিটারেচার এসোসিয়েশন, কবিতা উৎসব গ্রানাডা নিকারাগুয়া বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছে। আমিনুর রহমান কাজ করেন বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায়।