প্রফেসর রশিদুল হক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়ােটেকনােলজি ডিপার্টমেন্টের সাবেক অধ্যাপক। অনেক বড়াে জায়গা জুড়ে প্রফেসর রশিদের বাড়ি। বাড়ির ভেতর বিশাল চিড়িয়াখানা। সেই চিড়িয়াখানার পাশে আছে ছােট পশু হাসপাতাল। সকলে জানে সেখানে চিড়িয়াখানার অসুস্থ পশু-পাখির চিকিৎসা করা হয়। ঘটনা অন্য রকম। এটা কোনাে সাধারণ পশু হাসপাতাল নয়। এটা প্রফেসর রশিদের মিনি ল্যাবরেটরি। তিনি শিয়াল আর কুকুরের জিন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার ইচ্ছে প্রাণীর মস্তিষ্কের নিউরন একশনের নির্দিষ্ট কাজ। বদলে দেওয়া। তাতে প্রাণীর আচরণ পালটে যাবে। প্রফেসর রশিদুল হক একটি সফল অপারেশন করেছেন। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে বানরের ব্রেইনে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তিনি বানরের ক্রমােজমে বুদ্ধিমত্তা আর আচরণের জিনে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও আচরণের জিন বসিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তার ভােকাল কর্ডে বড়াে ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। বানর আছে মহা আনন্দে। তাকে খবরের কাগজ পড়তে শেখানাে হয়েছে। সে সকালবেলায় আয়ােজন করে খবরের কাগজ পড়তে বসে। বাংলা শিখে ফেলেছে। ইংরেজি শেখানাে শুরু হয়েছে। তাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারদের কনফারেন্সে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। প্রফেসর রশিদ ঘরে ঢুকলেন। তার সঙ্গে ঢুকেছে বানর। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে যার ব্রেইনে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। বানরকে শান্ত ও গম্ভীর দেখাচ্ছে। ঘরের ভেতর হঠাৎ সুনসান নীরবতা নেমে এসেছে। সকলেই কিছুটা বিস্মিত হয়েছেন। বানর। চারপায়ে হেঁটে আসেনি। সে মানুষের মতাে দুই পায়ে হেঁটে এসেছে। বানর অদ্ভুত এক প্রশ্ন করেছে। সে বলল, আমার আবেগ-অনুভূতি মানুষের। শরীর বানরের। আমার পরিচয় কী? আমি বানর না মানুষ? হতভম্ব হয়ে গেছেন প্রফেসর রশিদ। তাকে বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে। এই প্রশ্নের উত্তর তিনি জানেন না। ফ্যালফ্যাল করে বানরের দিকে তাকিয়ে আছেন। সত্যি তাে সে কি বানর না মানুষ! নাকি অসম্পূর্ণ মানুষ, ঊনমানব।
দীপু মাহমুদ। জন্ম ২৫ মে ১৯৬৫, নানাবাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার গ্রাগপুর গ্রামে। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে দাদাবাড়ি হাটবোয়ালিয়া গ্রামে। বেড়ে ওঠা স্নেহময়ী, কালিশংকরপুর, কুষ্টিয়া। পিতা প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল হুদা, মা হামিদা বেগম। পড়াশোনা করেছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতায়। আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিএইচডি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে। স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সায়েন্স ফিকশন সাহিত্য পুরস্কার, এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার, শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী স্বর্ণপদক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্বর্ণপদক, আনন্দ আলো শিশুসাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার, আবু হাসান শাহীন স্মৃতি শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কবি জীবনানন্দ দাশ স্মৃতিপদকসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন সম্মাননা।