হিসেব করে দেখলাম, নয় নয় করে নাসের স্যারের সাথে সুখে দুঃখে কাটিয়ে দিয়েছি প্রায় ৩১ টি বছর । কত কথা কত স্মৃতি মনের কোণে ভিড় জমাচ্ছে। কিন্তু লিখতে গিয়ে দেখছি কিছুই বেরিয়ে আসছে না। কলমের আগায়। সময় লাগবে স্যারের সম্পর্কে লিখতে, আরও অনেক সময় লাগবে আমার। তাঁর ছাত্র ছিলাম ৮ বছর পরের ২৩ বছর কাছে পেয়েছি সহকর্মী হিসেবে। কিন্তু এই ৩১ বছরই তার ছাত্র হয়ে ছিলাম। প্রতিটি মুহূর্তই তাঁর অবারিত জ্ঞানভাণ্ডার থেকে কিছু না কিছু শিখেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দুজন একই অফিস শেয়ার করেছি। অনেক রকম ষড়যন্ত্র হয়েছে আমাদের আলাদা করার জন্য। দীর্ঘ ৩১ বছরের সম্পর্ক। এত দীর্ঘ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাবা মা, ভাই-বােনের মাঝেও তাে কত ভুল বােঝাবুঝি হয়, মনােমালিন্য হয়। স্যারের সাথেও আমার মতান্তর হয়েছে কখনাে সখনাে, কিন্তু কোনদিনই মনান্তর হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যে বছর ভর্তি হই ঠিক সেই বছরই স্যার শিক্ষক হয়ে এলেন। এলেন মানে মনােয়ার স্যার নিয়ে এলেন। সে এক কাহিনী । পরে বলছি সে কথা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন । ক্লাস করতে গিয়েছি। তখন প্রতি বর্ষে ২০০ জন ছাত্র ভর্তি হত বিভাগে। সেশন জ্যামের কারণে প্রায় ৮টা ব্যাচ ছিল বিভাগে, শিক্ষক। মাত্র ১০ জন । বিভাগে ক্লাস শিডিউল প্রায় ভেঙে পড়ার মত। স্যারেরা এক ক্লাসে অংক করতে দিয়ে আরেক ক্লাসে যান পড়াতে । প্রথম দিন- সবাই সবার সাথে পরিচিত হবার দিন। মনােয়ার স্যার তাে জীবন্ত কিংবদন্তি ।
জন্ম এবং বেড়ে ওঠা রাজশাহী শহরে । লেখাপড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, রাজশাহী কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে। ১৯৯২ সালে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও পরিসংখ্যানে পিএইচডি। নির্ভরণের সমস্যা নির্ণয়, টেকসই পরিসংখ্যান ও বহিস্থ শনাক্তকরণের একজন বিশেষজ্ঞ। পরিসংখ্যান বিষয়ে দুই পাঠ্যবইসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁ প্রকাশনা ১২৫টিরও বেশি। কায়রোর আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড ভিজিটিং প্রফেসর এবং মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর পদে তিনি শিক্ষকতা করেছেন।