"তাঁহাদের সঙ্গে কথোপকথন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ এই সাক্ষাৎকারগুলাে গ্রহণ করা হয়েছিল ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে। এ সময়ের এক সংবেদী কথাশিল্পী আহমাদ মােস্তফা কামাল-তখন ছিলেন এক তরুণসম্ভাবনাময় লেখক-মুখােমুখি হচ্ছিলেন দেশের প্রাজ্ঞ অগ্রজ লেখকদের। দুজন লেখকের কথােপকথন যে ভিন্নমাত্রা পাবে তাতে আর সন্দেহ কী? ফলে পত্র-পত্রিকায় এগুলাে প্রকাশের সময়ই তুমূল আলােচনার জন্ম দেয়। সেই আলােচনা আজও থামেনি। বারবার এসব সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ ফিরে ফিরে এসেছে লেখক-পাঠক-গবেষকদের আলােচনায়, পুনর্মুদ্রিত হয়েছে বহুবার, বহু জায়গায়, কিন্তু স্বয়ং সাক্ষাৎকার-গ্রহীতাই এগুলােকে দুই মলাটের মধ্যে গ্রন্থিত করার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়ে এসেছেন বরাবর। এই এতদিন পর আমরা সবগুলাে সাক্ষাৎকার একসঙ্গে পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে গৌরব বােধ করছি। সাক্ষাৎকারের একটা বিশেষ দিক হলাে- সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হলে সাক্ষাৎকার-দাতা এবং গ্রহীতা উভয়েরই কথনভঙ্গিটি এখানে ধরা থাকে। যারা চলে গেছেন, তাদেরকেও জীবন্তরূপে পাওয়া যায় সাক্ষাৎকারে। এই গ্রন্থে যাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে তাঁদের অনেকেই আর আমাদের মাঝে নেই, অথচ পাঠকরা তাদের সেই জীবন্ত কথনভঙ্গিটি ঠিকই খুঁজে পাবেন। গ্রন্থটি যে পাঠকদের জন্য গভীর আনন্দের উৎস হবে সে বিষয়ে আমাদের কোনাে সন্দেহ নেই।
Ahmad Mostofa kamal, জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। পড়াশোনা করেছেন পাটগ্রাম হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি, এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচ.ডি। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ কর্মরত। কিন্তু যাবতীয় বৈষয়িক সাফল্যের সম্ভাবনাকে নাকচ করে শুধুমাত্র লেখালেখিকেই তিনি জীবনের সকল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। লেখালেখির শুরু ’৯০ দশকের গোড়া থেকেই। প্রথম গল্পগ্রন্থ দ্বিতীয় মানুষ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর আরো সাতটি গল্পগ্রন্থ, ছ’টি উপন্যাস এবং চারটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেরিয়েছে। এটি তাঁর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য লাভ করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩’ পুরস্কার। দ্বিতীয় উপন্যাস অন্ধ জাদুকর ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’ ২০০৯-এ, এবং তৃতীয় উপন্যাস কান্নাপর্ব ২০১২ সালের শ্র্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ২০১৩।