দর্শনের শূন্য অথবা শূন্যের দর্শনে পুরো জগৎ আন্দোলিত হয়েছে, হয়েছে বিমোহিত ও আকর্ষিত। অন্তর্দর্শন বা আত্মার সন্ধান মানবাত্মার মর্মযন্ত্রণা ও স্বেদরক্তকে আবিষ্কার করেছে সৃষ্টিবেদনায়। আজকের তরুণ-তরুণীরা হয়তো ভুলেই গিয়েছেন নিজের ভেতরকার সমস্যায় মানব-হৃদয় কীরকম জট পাকিয়ে গিয়েছে। অথচ তাই শুধু ভালো লেখার জন্ম দিতে পারে। আহমেদ ফিরোজ এই ভূখণ্ড থেকে বিশ্বব্যাপী তারই সন্ধান করেছেন। প্রেমে, স্পর্ধা আর সাহস আর সম্মান আর আশা আর অহমিকা আর মায়ামমতা আর আত্মত্যাগে...
রাতের ঘোড়া কবি, গল্পকার ও গবেষক আহমেদ ফিরোজ-এর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ। কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-গবেষণা প্রভৃতি বিষয়ে তিনি নিয়মিত লিখে চলেছেন। সম্পাদনা করেছেন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বই। রাতের ঘোড়া তাঁর ২৬তম গ্রন্থ। কবি লিখেছেন, কবিতার বিস্তার এমনতর, কখনো লাতিন আমেরিকার গল্প পড়ে এসেছে, কখনো বোদলেয়ার। আবার সর্বময়তা জুড়ে ফিরে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ; জীবনানন্দ কিংবা বুদ্ধদেব বসু ছেড়ে যাননি; পাশে পেয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম থেকে রণজিৎ দাশ পর্যন্ত। প্রেরণার উৎস হয়ে এসেছেন মুহম্মদ (স.), গৌতম বুদ্ধ কিংবা লালন; আবার কখনো পিতা, পিতামহ, মাতা, ভগ্নি, বন্ধু-সুহৃৎ। তিনি আরো লিখেছেন, নারী কবিতার প্রধান অনুষঙ্গ ও যাত্রী; পুরুষ তার সহোদর, পর্যটক। নারী-পুরুষ মিলে কবিতাকে অন্যতর এক মর্যাদা দিয়েছে; নারী দিয়েছে প্রাণ, পুরুষ তার অবয়ব। কবি তার এই আনন্দযাত্রায় সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
কবিতা রচনা দিয়ে সাহিত্যযাত্রা, গান-গল্প-প্রবন্ধ-ছড়া-চিত্রনাট্য-কলাম প্রভৃতি লিখে চলেছেন। আধুনিক বিশ্বে ভয়ঙ্কর দুটি শক্তি : রাজনীতিক ও যাজক, তাদের ভণ্ডামির বিরুদ্ধে তুলে ধরেছেন কলম-সম্ভাবনা গদ্য-পদ্য, লিখছেন খোলামত ও মতাদর্শ।