"বার বার ফিরে যাই" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের বিশাল গভীর পরিধিতে ডুবে আছে বাঙালির ইতিহাসের যে গৌরবােজ্জ্বল অধ্যায়, তারই কিছুটা উন্মােচিত হয়েছে এই গ্রন্থে। উনিশশাে একাত্তরের মার্চে ঢাকায় যখন গণহত্যা চলছে, তখন কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাউনিতে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলায় আবদ্ধ বাঙালি অফিসার আর জোয়ানদের মানসিক সংকট, অপমানের যন্ত্রণা, ক্রোধ, প্রতিশােধ স্পৃহা এবং বিদ্রোহের শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মুহূর্তগুলাে এতে পরিষ্কার ফুটে উঠেছে এক অসাধারণ সাধারণ ভাষায়। সেই সঙ্গে বিদ্রোহী এক সংসপ্তক সেনাবাহিনীকে অনিবার্য ধ্বংসের পথ থেকে ফিরিয়ে বাঙালির বিজয়ের অক্ষৌহিনী বাহিনীতে পরিণত করে যে প্রতিভাবান রণনায়ক, ঝরেপড়া রক্ত আর ধর্ষিতা বােনের অশ্রু থেকে জন্ম নেয়া স্ফুলিঙ্গগুলিকে অগ্নিশিখার মতাে মুক্তিযােদ্ধায় রূপান্তরিত করে যার নেতৃত্ব, সেই মানুষটির দূরদৃষ্টি আর নিষ্ঠার অশ্রুতপূর্ব বিভিন্ন তথ্য আছে এই বইতে। সেনাবাহিনীর এক বাঙালি তরুণের চিকিৎসক থেকে মুক্তিযােদ্ধায় ক্রমবিকাশের কাহিনীর ভেতরে যুদ্ধকালের প্রতিমুহূর্তের ভীতি আর সাহস, শােক আর সুখ, হতাশা আর আবেগ, বিয়ােগ আর প্রাপ্তির কঠিন কোমল বর্ণনা পাঠকের মনকে টেনে নিয়ে যায় সেই সময়ের গভীরে। আর এই সব বিবরণ যে কর্মকেন্দ্রটিকে ঘিরে আবর্তিত। সেই বাংলাদেশ হাসপাতাল বাঙালি মেয়েদের স্নেহমমতা আর বাঙালি ছেলেদের শ্রম সাধনায় লালিত পালিত হয়ে কিভাবে অংকুর থেকে মহীরুহতে পরিণত হয় তারও প্রামাণ্য দলিল ‘বার বার ফিরে যাই”।