মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ছোটনদী গুলাই ও কালিগঙ্গার কূলঘেঁষা ব্রী-কালিয়াকৈর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শফিক হিরো। জীবনবোধ ও দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সাহিত্য চর্চা করেন ছাত্রজীবন থেকে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিরাজমান পীড়াদায়ক অসংলগ্নতা তার কবিতায় মূর্ত হয়ে ওঠে। ‘মুজিবনামা’ তার লেখা একটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ কাব্যগ্রন্থেটি প্রতিটি কবিতাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা হয়েছে। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন অর্জনের প্রয়াস এবং পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বাংলাদেশের ‘জাতির জনক’ বা ‘জাতির পিতা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ‘শত মুখের শত কষ্টে অন্তর গলে মৃত্যুর সম্মুখে বুক মেলে তুমি এলে। তুমি এলে আকাশে-বাতাসে বাজিয়ে ডঙ্কা ছড়িয়ে যেন মহাপ্রলয়ের শঙ্কা, তুমি এলে মহাপ্লাবনের মতো বাঁধ ভেঙে ভেঙে ভূমিকম্পের মতো ধরণী কাঁপানো ঢঙে তুমি এলে।’ তোমার আগমণ-পৃষ্ঠা/৭ মুজিব মানে বঙ্গবন্ধু মুজিব মুক্তির ধাম, মুজিব মানে বাংলাদেশ স্বাধীনতার নাম। মুজিবনামা-পৃষ্ঠা/৩৮ বর্তমান সময়ের প্রায় সব কবিই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। এটা কোনো দলের আনুগত্য নয়, এটা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা পাবার জন্য নয়, বাংলাদেশের কবিরা বঙ্গবন্ধুকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন। তার নেতৃত্ব, তার আদর্শে যে কেউ অনুপ্রেরণা বোধ করবে। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির গর্ব। তিনি দেশ কাল পাত্রে উর্ধ্বের একজন মানুষ। কবি শফিক হিরোর কবিতাগুলোর মধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্বের গৌরবকে আরও কাবিক্য ও নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার এই কাব্যপ্রয়াস আরও বেগবান হোক এবং বাঙালির এই শ্রেষ্ঠ মানুষটিকে তার কাব্য পড়ে আরো বেশি জীবনঘনিষ্ঠ করে নিক।
শফিক হিরো’র জন্ম ১ই জানুয়ারি ১৯৭৬, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানার ছোটনদী শুলাই ও কালিগঙ্গার ক‚লঘেঁষা ব্রী-কালিয়াকৈর গ্রাম। পিতা মো. ইমান আলী; তিনি স্বনামধন্য একজন অধ্যক্ষ ছিলেন। মাতা আনোয়ারা বেগম। গ্রামের নৈসর্গিক আবহে কাটিয়েছেন শৈশব ও কৈশোর। সবুজ নির্জনতার সেই আবহে রয়েছেন এখনও। জীবনবোধ, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাহিত্য চর্চা করেন ছাত্রজীবন থেকে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিরাজমান পীড়াদায়ক অসংলগ্নতা তার কবিতায়, উপন্যাসে মূর্ত হয়ে ওঠে।