সিঁড়ি দিয়ে ওঠার শব্দটা দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে। পাগলের মতাে কেউ সিঁড়ি বেয়ে ছুটছে ওপরের দিকে। ফাঁকা কনস্ট্রাকশন বিল্ডিংটাতে শব্দগুলাে যেন বিস্ফোরিত হচ্ছে। ছাদে উঠে আসতেই সূর্যের আলাে যেন তীর ছুড়ে মারল মেয়েটার চোখে। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি হবে, পরনে নীল জিন্স আর সাদা শার্ট। হাতে একটা বেশ বড় হ্যান্ডব্যাগ। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে আর একটু হলেই রক্ত চামড়ার নিচ থেকে বেরিয়ে আসবে, শুধু যেন একটু আহ্বানের অপেক্ষা। প্রচণ্ড হাঁপাচ্ছে মেয়েটা। আশপাশে তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজতে শুরু করেছে সে। কিছুই যেন খুঁজে পাচ্ছে না। পাগলের মতাে ছাদের এদিক থেকে সেদিক হেঁটে যাচ্ছে। ব্যাগ থেকে কাগজগুলাে বের করে ছাদের ওপর থেকে ফেলে দিল। তারপর হঠাৎ চিৎকার। এ যেন নিজের জীবন ভিক্ষার জন্য চিৎকার। নিজেকে সামলাতে না পেরে একসময় মাঝারি একটা ইটের টুকরাে নিয়ে নিজেকেই আঘাত করতে শুরু করল। মাথার ডানপাশ থেকে রক্ত ঝরে সেই নিস্পাপ চেহারা বেয়ে মাটিতে পড়ছে। সে আর পারছে না সহ্য করতে। সময় যেন মানতে চাইছে না। অবশেষে হাঁটু গেড়ে বসে হান্ডব্যাগটা টেনে নিয়ে ভেতর থেকে পয়েন্ট থ্রি এইট জিরাে ক্যালিবার হ্যান্ডগানটা বের করে নিজের মাথায় ধরে। শেষবার চোখটা অনেক জোর করে বন্ধ করেছিল। তবুও চোখগুলাে থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে। তারপর একটা গর্জন শেষে চারপাশে যেন নিস্তব্ধতা ছড়িয়ে দিল।
জন্ম ৫ আগস্ট ১৯৯২। দাদার বাড়ি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভূক্ত গোমা গ্রামে। বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে লেখালেখি আর মঞ্চে অভিনয় তার শখ ছিল। এরপর পড়াশোনা শেষ করে পেশা হিসেবে বেছে নেন একজন রুপালী পর্দার নির্মাতা হিসেবে। বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন গাজী এবং মা একটি বেসরকারি হসপিটালে চাকুরিরত সাঈদা বেগম। তিন ভাই বোনের মধ্যে পরিবারে সবার কনিষ্ট তিনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিতে অভ্যস্ত রেহমান রাহাত। লিখেছেন অসংখ্য কবিতা এবং ছোটগল্প যা বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকা সহ বিভিন্ন সংকলনে প্রকাশিত। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে নির্মাণ করেছেন ডকুছবি, শর্টছবি, টেলিছবি সহ অনেক চিত্রলিপি যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন সম্মাননা নিয়ে এসেছে। বর্তমানে তিনি একটি অডিও-ভিজ্যুয়্যাল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।