"মানুষের পায়ের আওয়াজ" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ মানুষের যখন লিপি ছিলনা, ইতিহাস লিখে যাওয়ার সুযােগ ছিলনা, সেটি প্রাগৈতিহাসিক কাল। মানুষের অস্থিত্বের ও অগ্রযাত্রার সিংহভাগ সময় জুড়ে রয়েছে এই প্রাগৈতিহাসিক কাল। এ অগ্রযাত্রার পায়ের আওয়াজ ক্ষীণ থেকে স্পষ্টতর হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছতে পারছে একমাত্র প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার ও গবেষণার মাধ্যমে। এ গবেষণার ভিত্তিতে পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা যুগের মানুষের যে জীবন, যে সংস্কৃতি উঘাটিত হয়েছে তার ভিত্তিতেই এই বইয়ের গল্পগুলাে রচিত হয়েছে। এক একটি গল্প বহু যুগের ওপারের এক একজন কল্পিত মানুষকে নিয়ে, যার জীবন-বৈশিষ্টের ও সুখ-দুঃখের কাহিনীতে ওখানকার সেদিনের মানুষকে আমরা দেখতে পাবাে। আধুনিক বিজ্ঞানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের এমন সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ সম্ভব হচ্ছে যে সামান্য একটু হাড়ের টুকরা অথবা কাদায় আটকানাে ক্ষুদ্র পরাগরেণু থেকে সেদিনের পরিবেশ ও জীবন-সংগ্রামের এক একটি দিক উঘাটিত হতে পারে। অবশ্য পাথুরে নিদর্শন সব সময় মানুষের ভাবনা, স্বপ্ন, কল্পনা ধারণ করতে পারেনা। কিন্তু মানুষ সেই সুদূর অতীত থেকে যে সব নান্দনিক শিল্পকর্ম রেখে গেছে গল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সেখান থেকেও এসেছে। এ বইয়ের এক একটি গল্পের পেছনে এসব কী কী উঘাটন কাজ করেছে তার কিছু ব্যাখ্যা প্রত্যেকটি গল্পের সঙ্গে দেয়া হয়েছে। সেদিক থেকে বইটি আধুনিক প্রত্নতত্ত্বের সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবার একটি প্রয়াসও বটে।