সবুজ পত্র-কে বুদ্ধদেব বসু বাংলা সাহিত্যের প্রথম লিটল ম্যাগাজিন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন—তা নিয়ে অনেকের যেমন সমর্থন আছে, তেমনি বুদ্ধদেব বসুর বিপক্ষেও আছে নানান যুক্তি । সবুজ পত্র-যুগে 'লিটল ম্যাগাজিন'-এর যে কনসেপ্ট ছিল পরিচয়-কবিতা-পূর্বাশা পর্বে সেই ধারণা অনেকটাই পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল। চতুরঙ্গ-এক্ষণ-শতভিষা বা অনুষ্টুপ-প্রমা-বারোমাস পর্বে লিটল ম্যাগাজিনের চরিত্র আবারও বদলে গেল। প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার কথা বলতে গিয়ে লিটল ম্যাগাজিন কী কী পেরেছে, কী পারেনি? নাকি নিজেই হয়ে উঠেছে পালটা প্রতিষ্ঠান? বিকল্প প্রকাশনার কথা বলতে গিয়ে হয়ে ওঠেনি তো শাঁসালো বাণিজ্য-প্রকল্প? স্বতন্ত্র কৌণিক অবস্থান থেকে নির্মোহ দৃষ্টিতে প্রাবন্ধিকরা সংকলিত রচনায় তা ব্যাখ্যা করেছেন। দেশভাগ-পরবর্তী তিন-চার দশক ধরে যে লিটল ম্যাগাজিন ছিল শিল্প-সাহিত্য আন্দোলনের অন্যতম মাধ্যম, বিকল্প সন্দৰ্ভকে ধারণ করত, বিশ্বায়ন-পরবর্তী সময়ে সেটির অবস্থানটা ঠিক কোথায়? এ গ্রন্থ সেসব প্রশ্নের যেমন উত্তর খোঁজে, তেমনি প্রযুক্তি ও মিডিয়ার চাপে পৃথিবীজুড়ে যখন ছাপা বই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তখন লিটল ম্যাগাজিন কি পারবে পাঠকের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা অটুট রাখতে? সেসব প্রশ্নের সঙ্গে লিটল ম্যাগাজিনের বহুমাত্রিক লড়াই ও তার পর্ব-পর্বান্তর এই বইয়ে নানান দৃষ্টিভঙ্গির মধ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
বরেন্দু মণ্ডলের জন্ম ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যের সাম্মানিক স্নাতক। স্নাতকোত্তর ও পিএইচ. ডি করেছেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক। কলেজ জীবন থেকেই লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন ও চিন্তাচর্চার সঙ্গে জড়িত। এক সময় সম্পাদনা করতেন গ্রীক কোরাসের মতো নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন। দেশে ও বাংলাদেশের ছোটো পত্রিকায় মূলত প্রবন্ধ লেখেন।