"অনেক কথা ছিলো বলার" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ‘অনেক কথা ছিল বলার’ কবি রেদোয়ান মাসুদ-এর প্রজন্ম ভাবনায় উদ্ভাসিত শাব্দিক তুলিতে অঙ্কিত কবিতার বই। তরুণ এই কবির মনে হাজারাে প্রশ্ন তাড়া করে বেড়ায়। আর সেখান থেকেই আবীরমাখা শব্দশৈলীতে নির্মাণ করেন কাব্যিক ভুবন। তাই তিনি লিখেন, 'অনেক কথা ছিল বলার / বলা হলাে না / অনেক কথা ছিল জানার / জানা হলাে না। পেশাগত কারণেই শিল্প-সাহিত্যের সাথে তাঁর নিবিড় বন্ধুত্ব। সাহসী ভাবনায় তিনি লিখেন, “ওটা তােমার জন্য নয় / ওখানে হাত দিও না/ পুড়ে যাবে সে হাত/ ওটা বিধাতার লিখন/ ওটার নাম কপাল। কবিতার এই কয়টি চরণে বােঝা যায় কবি রেদোয়ান মাসুদ আমাদের সাহিত্যে কতটা সরব থেকে নিজের অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন। তার শব্দচয়ন, বাক্য বিনির্মাণ, ছন্দের দখল, ভাবনার বিশালতা ও কবিতার শরীর গঠনের মুনশিয়ানা আমার মতে অনেক পাঠকের মনেও কাব্যিক রস সঞ্চারে রঙ ছড়াবে বলে আমার বিশ্বাস। কবিতার বাইরেও তিনি নানান বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। একাধিক বইও প্রকাশিত হয়েছে। ভালােলাগার বিষয় ইতিহাস বলেই হয়তাে তিনি লিখেন, এমনই এক মানুষ আমি, মেঘের আড়ালেই করি বসবাস/ জীবনের যত চাওয়া-পাওয়া সবকিছু হয়ে থাকে বনবাস'। লেখকের এই আড়ালে থাকার রহস্যোন্মােচন করতে হলে পাঠককে তার লেখার গভীরে প্রবেশ করতেই হবে। দেশমাতৃকাকে নিয়ে কবির কলমেও শ্লোগানের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়। রাজনৈতিক দর্শনে শাণিত পঙক্তি ও মৃত্তিকার ঋণশােধে নিজের উপস্থিতি জানান দেয়, সাক্ষী আছে। বিস্তীর্ণ জনপদ/ সবুজ বাংলার মৃত্তিকার ঘ্রাণ/ত্রিশ-লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ/এক সাগর রক্তের কলতান। তরুণ কবি রেদোয়ান মাসুদ আমাদের কবিতার মিছিলে আগুয়ান কবি। অনেক কথা ছিল বলার কবিতার বইটিতে দেশ-মৃত্তিকাইতিহাস ও প্রেম-ভালােবাসা- বিরহ এসবই নিজস্ব আঙ্গিকে, নিপুণতায় ও সৃজনশীলতায় মােড়ক বন্দি করছেন।
রেদোয়ান মাসুদ বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কবি, ঔপন্যাসিক ও ছড়াকার। কবিতা দিয়ে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করলেও একজন ঔপন্যাসিক হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রেদোয়ান মাসুদের জন্ম ৬ই জানুয়ারী শরীয়তপুরের জাজিরায়। তিনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তথ্য ভান্ডার বাংলাকোষ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সি ই ও, হেলথ এইড হাসপাতাল লিঃ এর পরিচালক ও জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল মোড়ল নিউজ এর প্রকাশক। ২০১৪ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মায়ের ভাষা’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘অপেক্ষা-১’। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম ম্যাক্সিম ‘জোছনায় পোড়া চোখ’। তার শৈশব ও কৈশর কেটেছে শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে। মাছ ধরা, ঘেলাধুলা ও বাগান করা ছিল তার প্রিয় শখ অথচ এই ইটপাথরের দেওয়ালঘেরা শহরে তাকে পেয়ে বসেছে লেখার জগতে। তবে শহরের এই যান্ত্রিক জীবনেও তাকে বারবার তাড়িয়ে বেড়ায় গ্রামের সেই মা ও মাটির গন্ধ। রেদোয়ান মাসুদ দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্থ মানুষকে খুব বেশি ভালবাসেন। শত ঝামেলার মাঝেও তিনি তাদের পাশে দাঁড়াতে কার্পণ্যবোধ করেন না। তিনি ততোটা জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপনে আগ্রহী নন। তাই আধুনিকতার এই যুগে একেবারে সাধারণ জীবনযাপন করছেন।