নিশুতি রাতে ঝিঝি পােকার ডাকের মতাে শব্দ, ক্রমান্বয়ে ভয়ালরূপ ধারণ করছে। অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠার মত অবস্থা। বার বছরের অলিভ বুঝতে পারছে। সে ভীষণ রকমের কোনাে বিপদের মধ্যে আছে বা পড়েছে। কিন্তু বিপদের মাত্রাটা সে অনুভব করতে পারছে না। হঠাৎ মায়ের মুখটা মনে পড়লাে ওর বাবা-মার সাথে যাচ্ছিল নিউইয়র্ক। হজরত শাহজালাল এয়ারপাের্ট ছেড়েছে টার্কিশ এয়ার লাইন্সের প্লেন বাংলাদেশে সময় দুপুর বারটা চল্লিশে দুপুরের খাবার খেয়ে যাত্রীরা সবাই ঢুলছিল। অলিভের চোখেও নেমে এসেছিল রাজ্যের ঘুম। ঘুম ভাঙার পর সে নিজেকে আবিষ্কার করে কোমর পানিতে ডুবে বসে আছে ও নড়তে চড়তে পারছে না। কেন, কীভাবে এমন হলাে, কীভাবে সে ঘুটঘুটে অন্ধকার-এমন একটা জায়গায় এলাে কিছুই মনে করতে পারছে না। চি চি চি... পাখির মতাে কিচির মিচির শব্দ শুনতে পেল অলিভ। ওর খুব কাছাকাছি কোনাে অবস্থান থেকে শব্দটা আসছে। কীসের শব্দ এটা.. কারা করছে ... কেন করছে? কেউ কী ওকে ভয় দেখাতে চাইছে! কিন্তু ও তাে ভয়-ডর এসবের উর্ধ্বে চলে গেছে। ভয় পেয়ে কী হবে? জীবনটা মনে হচ্ছে বাঁচবে না। মনে হচ্ছে যেন সমুদ্রের কিনারায় বসে আছে ও। যেহেতু নড়াচড়া করতে পারছে না, যেকোনাে সময় হাঙর জাতীয় কোনাে প্রাণি এসে ওকে গিলে ফেলবে অথবা টেনে নিয়ে যাবে। বিশালাকৃতির কোনাে জলজ প্রাণি ওকে গিলে খাচ্ছে... অনুভূতিটা কেমন হবে ভাবতে ভাবতে অলিভ টের পেল কেউ ওর ঘাড় স্পর্শ করেছে। কে...কে হতে পারে । ঘাড়টা সামান্য ঘুরিয়ে বােঝার চেষ্টা করল অলিভ। ভয় পেয়াে না ...। শান্ত, নম্র একটা কণ্ঠস্বর । বেশ মিষ্টি। অলিভের মনটা কিছুক্ষণের জন্য ভালাে হয়ে গেল। আমি ভয় পাচ্ছি না। আমার মধ্যে কোনােরকম অনুভূতি কাজ করছে না। মনে হচ্ছে আমার শরীরে কোনাে হরমােন নিঃসরন হচ্ছে না। তােমরা কারা? আমরা ওয়াটারলিয়ন...!!! এবার পড়ে ফেলি পুরাে বইটা...।