"ফিল্ম সেন্স" বইটির মুখবন্ধ থেকে নেয়াঃ আইজেনস্টাইনের মূলগত ভাবে শিক্ষামূলক প্রচারবাদী ছবিতে সুষম ও অভিঘাতী মিলন ঘটে শুধু আঙ্গিক ও বক্তব্যের নয়, শিল্প ও আদর্শেরও। তার ছবি তাই বিপ্লবী উম্মাদনার সাংগঠনিক প্রকাশ। তার শিল্প নান্দনিক প্রচারমূলকতা। সত্তা-বিচারে চলচ্চিত্র ত্রিমাত্রিক, তা কাজ করে বিজ্ঞান, শিল্প ও তৃতীয় আর কিছুকে নিয়ে। এই তৃতীয় আর কিছু আইজেনস্টাইনের বেলায় নান্দনিকতা। এই নান্দনিকতাকে ভালােভাবে বুঝতে হলে তার শিল্পচেতনাকেও জানা চাই। তার শিল্পচেতনা আবাল্য দুই অতি সমৃদ্ধ প্রবাহে লালিত, একটি রাশিয়ার অন্তত দু'হাজার বছরের নান্দনিক ঐতিহ্য, অন্যটি য়ুরােপিয় রেনেসাঁসের পাঁচশাে বছরের শৈল্পিক অভিজ্ঞতা। সের্গেইএর শিল্পের বিভিন্ন উপাদান রাশিয়ার নান্দনিক ঐতিহ্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়েও সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার প্রতি বিশ্বস্ত থাকে। এইভাবে তার ছবি রাজনীতি হয়েও শিল্প হয়ে ওঠে, শিল্প প্রচারমূলকতা সত্ত্বেও পায় নান্দনিক বৈশিষ্ট্য। আইজেনস্টাইনের জীবন, শিল্পকর্ম ও দর্শন সম্বন্ধে বিভিন্ন লেখক বিস্তৃত আলােচনা করেছেন বাণীশিল্প-প্রকাশিত সংকলন-গ্রন্থ ‘আইজেনস্টাইন’-য়ে। সুতরাং আলােচ্য ভূমিকায় আমরা কিছুটা বিস্তারিতভাবে আলােচনা করছি শুধুমাত্র তার রচনা ও বিশেষত 'ফিল্ম সেন্স’-এর রচনাগুলি নিয়েই।