নারী যে সকল ক্ষেত্রে অধঃস্তনতার শিকার হয় পরিবার তার মধ্যে অন্যতম। পারিবারিক কাঠামাের ভেতরে ক্রিয়াশীল পিতৃতান্ত্রিকতা ও অসমতা নারীর অধিকার ও উন্নয়নের যাত্রায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে এবং পুরুষকে ক্ষমতাশালী করার মাধ্যমে নারীকে পৌছে দেয় প্রান্তিক অবস্থানে। পরিবারে নারীর এই অসম অবস্থান দূরীকরণে রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত পারিবারিক আইন তেমন কোনাে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রসঙ্গত, সম্পত্তির অধিকার প্রাপ্তিতে অসমতা, সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে প্রহসন, বিবাহ বিচ্ছেদে পুরুষের একাধিপত্যতা সর্বোপরি পরিবারে নারীর প্রতি সহিংসতার বিপরীতে পারিবারিক আইন ও ধর্মীয় আইনের সাংঘর্ষিক অবস্থান ও নারীকে প্রান্তিক থেকে প্রান্তিকতর করে তােলে। অপরদিকে, লিঙ্গীয় বৈষম্যভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় পরিবারকে ব্যক্তিগত মনে করার কারণে পরিবারে ও নারীর প্রতি নিপীড়নের ঘটনায় প্রণীত আইন ও তার ব্যবস্থা সব সময় নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে পৌছায় না। এমতাবস্থায়, পরিবার নামক কাঠামােকে নতুন করে সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে পুনর্বিচার করে দেখা ভীষণ জরুরী। রাষ্ট্রের ক্ষুদ্রতম একক ‘পরিবার’-এ যদি একজন নারী তার প্রাপ্য সম্মান এবং অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারে তবে বৃহত্তর পরিসরে উন্নয়নের আশা বাতুলতা মাত্র। তাই এ সকল বিষয়ের সাথে নারীমুক্তির বিষয়টি গভীরভাবে যুক্ত। পারিবারিক কাঠামােতে ধর্মীয় ও আইনি বেড়াজাল নারীমুক্তির বিষয়টিকে কীভাবে আটকে রাখছে ‘পারিবারিক জীবনে নারীর অধিকার’ শীর্ষক গ্রন্থে তাই আলােচনা। করা হয়েছে।