"আলোকিত জীবনের সন্ধানে" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ আমার হৃদয় মন অত্যন্ত কঠিন। জানা-অজানা গুনাহের কালিমায় আত্মার পরিচ্ছন্নতা ক্রমেই হারিয়ে ফেলেছি। তাই অন্ধকার জীবনে আলাের প্রতীক্ষা কে না করে? আলােকিত জীবনের সন্ধানে সম্মুখে পথচলা, অবহেলা আর গাফিলতিতে বারবার ব্যাহত হয়েছে। একদিন হঠাৎ করেই রামপুরা বাইতুল মামুর জামে মসজিদে জুমু'আবারের খতীব হিসাবে দায়িত্ব অর্পিত হলাে। মিম্বারে বসে অসংখ্য আলাের পিয়াসী ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের হৃদয় জগতে শুদ্ধতার চেতনা সৃষ্টি করতে হবে এটা ভাবতেই বড় কঠিন কাজ মনে হলাে। সুফীয়ায়ে কেরাম বলেছেন, বদ আমল ওয়ালা হওয়ার পরও অপরকে সত্য ও সুন্দরের কথা বলতে বলতে নিজের আত্মার জগতে পরিবর্তন আসতে পারে। অন্ধকারের বুক চিড়ে আল্লাহ্ পবিত্র নূরের প্রভাব একজন পাপাচারীকেও মর্যাদার সুউচ্চ মাকামে উন্নীত করে দেয়। মূলত: খতীব হিসাবে এই ছিল আমার পুঁজি। ইলম ও জ্ঞানের দৈন্যতা, আমল ও আখলাকের শত অপূর্ণতা সত্ত্বেও বিগত তিন বছর প্রতি শুক্রবার ধারাবাহিক এবং বিষয়ভিত্তিক আলােচনা করতে চেষ্টা করি। আমার এলােমেলাে কথা, ভাষা ও উচ্চারণে আঞ্চলিকতার ছাপ, রসহীন কণ্ঠ সর্বোপরি আকর্ষণহীন কিছু সময়ের বিরক্তিকর বক্তব্য মনােযােগ সহকারে কোন মুসল্লি শুনেন এটা আমার বিশ্বাস ছিলনা। কিন্তু অবাক হলাম তখন যেদিন জুমু'আর নামাযের পর একজন উদ্দীপ্তপ্রাণ মুসল্লী জনাব আলহাজ্ব মাে: খালিদ হাসান একগাদা কাগজের বান্ডিল আমাকে দেখিয়ে বললেন, হুজুর এগুলাে আপনার বিষয় ভিত্তিক বয়ানের কপি। আপনি এ পর্যন্ত যে সব বিষয় আলােচনা করেছেন আমি তা সংরক্ষণ করে কম্পিউটারে কম্পােজ করে দিলাম। আমি আলিম নই, তাই আপনি কারেকশন করে দিলে আমি বই আকারে ছাপার ব্যবস্থা করবাে। আমি সেদিন তার প্রতি পলকহীন চোখে তাকিয়ে ছিলাম। তার মেধা ও পরিশ্রমের জন্য নয়, আমার মতাে একজন অন্ধকার হৃদয়ের অধিকারীকে আলােকিত জীবনের সন্ধানে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দেবার জন্য। আলহামদুলিল্লাহ, প্রায় শতাধিক খুতবার মধ্যে বাছাইকৃত পঞ্চান্নটি সংক্ষিপ্ত বয়ানের সংকলন জনাব আলহাজ্ব মাে: খালিদ হাসান বর্তমান পুস্তকে বিন্যস্ত আকারে পরিবেশন করেছেন। বইয়ের কলেবর ভবিষ্যতে বড় হলে অবশিষ্ট বয়ান সমূহ সংযুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ্।