একদিন কর্মস্থল হতে বাড়ি ফেরার পথে আমাদের এলাকার লােকাল বাসে নাম জানা আঞ্চলিক পত্রিকার একটা শিরােনামে আমার চোখ আটকে যায়, “কুমারি অন্তঃসত্ত্বার আত্মহত্যা।” তখনি আমার মনে প্রশ্ন জাগে, কেন মেয়েটি আত্মহতত্যা করবে? তাকে কি বাঁচানাে যেত না? যে কারণে ওর এই করুণ পরিণতি সেই সুখের ধারে কাছেও হয়তাে ও যেতে পারেনি বা বুঝেও উঠতে পারেনি বা বােঝার মত বয়সও ওর হয়নি অথচ ঘটনার শিকার সে। আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অন্তত এটুকু জানি কোন মেয়েই আগ বাড়িয়ে প্রস্তাব করে না, অন্তত এ ব্যাপারে। তারপরাে তারই মান যায়, শেষে তারই দিতে হয় জীবন। আর তখনই মনে হয় এইসব বােকা মেয়েদের সচেতনের লক্ষ্যে কিছু লেখা প্রয়ােজন। নিকট আত্মীয় বা সমাজের কিছু ঘৃণ্য নিচুমনা। লােক দ্বারা উঠতি বয়সি মেয়েরা প্রায়ই নিগৃহীত হয়, যার বেশির ভাগই থাকে অপ্রকাশিত। এই লেখনিতে এরকম বেশ কিছু ঘটনার অবতারণা করা হয়েছে; কারণ অসংখ্য মেয়ের জীবনে অসংখ্য অপ্রীতিকর ঘটনা আছে। একটা মেয়ের জীবনে কিন্তু অসংখ্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে না। হয়তাে ঘটে একটা কি দুইটা, তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা তার জীবনে হানা দিবে তা কি সে জানে? তাই কি কি ধরনের সমস্যায় মেয়েদের পড়তে হয় তা আগে থেকেই জেনে রাখা ভালাে, যাতে করে ঐ সব পরিস্থিতি মােকাবিলার জন্য আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারে। তাই আমাদের এই অসুস্থ সমাজে ঘটিত কিছু বাস্তব ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ঘটনার তীব্রতা বুঝানাের জন্য অর্থাৎ একটা ঘটনা চলার মুহূর্তে ধীরে ধীরে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এবং তা থেকে যেন সে (শিকার মেয়েটি) ঘটমান। পরিস্থিতি উত্তরণে নিজের চিন্তাশীলতায় পথ খুঁজে পায়। একমাত্র এই প্রয়াসেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিস্তারিত বলার চেষ্টা করেছি। পরিশেষে প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে আমার নিবেদন, আশা করি যে কোন উঠতি বয়সি মেয়ে বা ছেলে এই বইটি পড়লে অন্তত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি উত্তরণের পথ খুঁজে পাবে এবং এ ধরনের অপকর্ম থেকে নিজেকে নিবৃত করার শুভবুদ্ধির উদয় হবে।