ফ্ল্যাপে লিখা কথা ভূতের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এই ভূ-ভারতে ভুল করে ভূ ভূ করতে করতে একটা ‘ত’ অক্ষর যুক্ত হতে হতেই ‘ভূত’ নামের একটি শব্দ সৃষ্টি হয়েছে মাত্র। সৃষ্টি হতে অনাসৃষ্টি। আর অনাসৃষ্টি হতেই অনাবৃষ্টি। তারপরেই তো অনাকৃষ্টি। ভূত বিষয়ক যন্ত্রনা এবং যন্ত্রনা একেবারেই কিন্তু মন্দনা। ভূত কেবল ভয়ের বিষয় নয়। ভূত আমাদের কুতকুত খেলা হতে নান অদ্ভত জিনিস উপহার দিতে পারে। এই আমি যেমন লিখছি ‘ ভূতের হাসি ১৮০’ । একশ আশি প্রকার ভূতের হাসি পৃথিবীতে বিরাজ মান। মনে করার কারণ নেই আামি হনুমান বলে এটি অনুমান করছি।আমি বিভিন্ন ভাষায় ভুতের হাসি নিজ কানে শুনে সংগ্রহ করেছি। একেবারে দেখেদেখে শুনেছি। আর কে না জানে শোনা কথায় বিশ্বাস করতে নেই। জানা কথা যখন মনে থাকে না তখন শোনার কথা Show না করে নানাদিকে go করে থাকে। ভুতের হাসি ধরবে কে ভূতের সাথে লড়বে কে? তাইতো ভূতের খুশি মারতে থাকে ঘুষি। হ্যা, আমি ভাই ভূতের ঘুষি খেয়েই কাগজে ঘুষাঘুষি করে যা খুশি তাই লিখেছি। “আমিতো বেকার, পেয়েছি লেখার পূর্ণ স্বাধীনতা। আপাতত? ইতি করি আমার লেখা।
ভূত ভূমিকা প্রথমেই বলে রাখি, এই গল্পগুলো আমি লিখিনি। তবে কে লিখেছে? প্রশ্ন খুব স্বাভাবিক। অনেক চিন্তা করে বলছি। এ সব গল্প আমার ভিতরের একটা না দশটা ভূতে দশটা গল্প লিখেছে। সব লেখকের বেশ কয়েকটা পালা ভূত থাকে। শিল্পীদের ডবল ডবল । ধ্রুব এষ আছে না, ওর চুলে দাড়িতে খালি ভূত আর ভূত। আপনার পালা ভূত না থাকলে দেখতে পারবেন না। বা Understand করতে পারবেন না। ঘুঘু দিয়ে ঘুঘু , কোরা দিয়ে কোরা শিকারের মতো আর কী। তো ভূতের জন্ম কাহিনীটা জানার দরকার নেই? পৃথিবীতে ভূত নিয়ে যখন এত ভূতাভূতি আর গুতাগুতি কিংবা কোতাকুতি তখন তার জন্ম ইতিহাসটা জানার প্রয়োজন তাই না? যখন প্রথম মানবের আগমন তখন হতেই ভূতের আগমন। খেয়াল করবেন যেখানে মানুষ নেই সেখানে ভূত নেই। মানে মানুষ ছাড়া কোনো ভূত -ভবিষ্যৎ নেই। ঠিক আছে। প্রথম মানুষটি মনে করেন যাচ্ছে পশ্চিম দিকে। সূর্য তখন পুবাকাশে । লোকটি চলছে। আকাশে মেঘ ছিল। হঠাৎ মেঘ কেটে গেল। আরো হঠাৎ দেখে তার আগে আগে কে যেন যাচ্ছে। হাঁটলে হাঁটে। দাঁড়ালে দাঁড়ায়। কান চুলকালে কান চুলকায়। কিল দেখালে কিল দেখায়। লোকটি ভীষণ ভাবে ভাবিত হয়ে কাপিত হয়ে যায়। এখন আমরা জানি ঔটা লোকটার ছায়া। কিন্তু প্রথম মানুষ তো তা জানতো না। ফলে তার মনের ভিতরে তির তিরানো একটা ভয় ঢুকে গেল । ঐ ভয় হতে ভয়াবহ, ভয়াবহ ভূয়া, ভূয়া হতে কী? ভূয়া হয়ে ভয়, ভয় হতে ভয়ানক। তারপর ধরুন নিজের ছায়া, নিজের কায়া একটু মায়া। এই মায়া অনুভব হতেই ভূতপ্রীতি। নিজেকে কে না ভালোবাসে? নিজের বিছানার ছারপোকাও কেউ কেউ ভালোবাসে। মারতে পারে মারে না। ছারপোকা পোষে। যেমন ছারপোকা পোষেন শিবরাম চক্রবর্তী। তো মানুষের ছায়া , তারপর মায়া শেষে ভূত পড়ল আয়া। কী বিশ্বাস হয় না ভায়া ? না হলে না। হলে বা! যা বলছিলাম। দশটি ভূতে দশটি গল্প লিখেছে। প্রকাশক ভূতকে অগ্রিম ভিটামিন কিছু দিয়োছিল। যে সব গল্প বড় হয়েছে সেগুলো বেশি ভিটামিন খেয়েছিল। ছোটগুলো এই কারনে ছোট। আমার ভূতো লেখগুলো পড়ে যদি পাঠকের মনে গুঁতো মেরে যায় তাহলে ভূতেরা হয়তোবা আরো লিখতে সাহস করবে। কাজেই সাবধান“ ভূতের হাসি ১৮০ পড়ার আগে আশি প্রকার বাতের কথা চিন্তা করবেন। পাঠককে আটক করার অপ- নাটকের প্রলাপ সমাপ্তি হো গিয়া। অত চিন্তা করার সময় নেই ভূত মিয়া। ভূতমুগ্ধ আলম তালুকদার সূচিপত্র *ইংলিশ ভূত *ফরাসি ভূত *জাপানি ভূত *জার্মান ভূত *আরবি ভূত *স্প্যানিস ভূত *মালয়েশিয়ার ভূত *ইরাকি ভূত *হিন্দি ভূত *বাংলার ভূত
Alam Talukder, জন্ম ১লা জানুয়ারি ১৯৫৬, টাঙ্গাইলে। শিশুসাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তাঁর স্বাভাবিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত বিচরণ। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা আশি ছাড়িয়েছে। শুধু শিশুসাহিত্য নয়, রম্যসাহিত্যেও তাঁর মুন্সিয়ানা লক্ষ করা যায়। চাঁদের কাছে জোনাকি ছড়ার বইয়ের জন্য ২০০০ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পালক অ্যাওয়ার্ড, জয়নুল আবেদিন পুরস্কার, কাদির নওয়াজ পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার, সাহস পুরস্কার, স্বাধীনতা সংসদ পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের চোখ সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭১ সালে তিনি সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার নামে একটি বইও তিনি রচনা করেছেন। আলম তালুকদার দেশের বিভিন্ন পাঠাগারের আজীবন সদস্য। বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার। তাঁর একটা মাত্র গিন্নি এবং একটা মাত্র নাতনি। তিনি তিন সন্তানের জনক। তাঁর প্রিয় ছড়ার লাইন- ‘শব্দ ছাড়া হয় না কিছু শব্দ হলো গুণ শব্দে জাগায় ভালোবাসা শব্দ করে খুন’