"শূন্য ঘরে লুটপাট" বইয়ের ফ্ল্যাপের কথা: সে মানুষ জানে, জীবনে খুব বেশি চাওয়াপাওয়া থাকতে নেই। মানবজীবন স্বল্পকালের। স্বল্পকালের এই জীবনকে দুঃখ গােলকে বাঁধিয়ে লাভ নেই। খুব বেশি চাওয়া-পাওয়া মানবজীবনকে অসুখী করে তােলে। সিদ্ধার্থ গৌতম মানবজীবনে দুঃখ ও দুঃখের কারণ নির্ণয়ে যে চতুরার্য সত্যের কথ বলেছেন তার মূলকথা তৃষ্ণা। তৃষ্ণা আছে বলেই জীবন দুঃখময়। তাই সে মানুষের জীবনে কোন তৃষ্ণা নেই। সে মানুষ বােহেমিয়ান। জগত সংসারের প্রতি কোন আগ্রহও নেই। যে মানুষ বােহেমিয়ান, জগত সংসারের প্রতি কোন আগ্রহ নেই সে মানুষের হাত শূন্য থাকার কথা। তারও হাত শূন্য। কিন্তু এই শূন্য হাতের মানুষের সাথেই প্রতারণা হয়। শাঠ্য হয়। শূন্য হাত আরাে শূন্য হয়। কোন এক রহস্যজনক কারণে শূন্য হাতের মানুষগুলাের জীবনেই প্রবঞ্চনা আসে বারবার। অদৃষ্টের পরিহাসে ভাঙ্গা নৌকাটাই ঝড়ে পড়ে। ছেড়া পাল আবার ছিড়ে যায়। বারবার প্রবঞ্চিত হওয়া শূন্য হাতের সে মানুষ ঘুরে বেড়ায়। শূন্য হাতের অন্য মানুষদের ঘূর্ণমান অদৃষ্টে ঘটে যাওয়া লুটপাট দেখে। দেখতে গিয়ে তাকে দীর্ঘপথ চলতে হয়। কখনাে সে চলার পথের সাথী হয় পেছনে বস্তা ঝুলতে থাকা। ছিন্নমূল শিশু, রাস্তায় অনাদরে পড়ে থাকা কালাে চোখের ভয়ংকর কুকুর অথবা নিজের সাথে থাকা নিজেরই ছায়া। আবার কখনো কখনাে সাথে থাকে অমাবশ্যার জমাটবাধা ঘুটঘুটে অন্ধকার অথবা আকাশের ফুটফুটে চাদ। সে মানুষ দেখে যায়। শূন্য হাতের মানুষদের জীবনে ঘটে যাওয়া লুটপাট দেখে যায়।