“বিশ্বযুদ্ধ" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ মানবসভ্যতার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে যুদ্ধ। পৃথিবীতে এ! পর্যন্ত দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। সব যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধ। হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় না। বিশ্বযুদ্ধ এমন যুদ্ধকে নির্দেশ করে যাতে বিশ্বের অধিকাংশ জাতিই প্রত্যক্ষ কিংবা পরােক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে; ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় অথবা সাহায্যের জন্যে অগ্রসর হয়। অতীতে অধিকাংশ সময় যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকত দুই দল। বিবদমান সৈন্যের ভেতর। কিন্তু ইউরােপের শিল্পবিপ্লবের সময় যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্রের যথেষ্ট উন্নতি হয়। যুদ্ধ নির্দিষ্ট স্থানে দুই সৈন্যের সম্মুখযুদ্ধে সীমাবদ্ধ না থেকে সামগ্রিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়। ১৯১৪ সালের আগস্টে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরু হয় এবং ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে তার নিষ্পত্তি ঘটে। অপরদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৩৯ সালে শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯৪৫ সালে। এখন পর্যন্ত যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। তিনটি মহাদেশে বিস্তৃত। ছয় বছর দীর্ঘ এ মহাযুদ্ধে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় কোটি মানুষ নিহত হয়েছে। এ গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃত কারণ, যুদ্ধের ভয়াবহতা ও মানব বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার, নৃশংসভাবে সামরিক ও বেসামরিক মানুষের মৃত্যু, যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পরাশক্তির উদ্ভব, সংক্ষেপে দুই বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্বযুদ্ধত্তোর পৃথিবীতে অস্ত্র প্রতিযােগিতার প্রেক্ষাপটকে উপলব্ধি করতে বইটি পাঠকদের সহায়তা করবে আশা করা যায়।