লক্ষ্মীছাড়ানোর সাতকাহনের সময়কাল ১৯৭৪-৮৭ সাল কলকাতা তথা ভারত। ‘ধ্যেত মশাই, কে শুনতে চায় এই সাতকাহন? তাও আবার পাঁচজনকে জড়িয়ে? লজ্জা করে না বলতে?’ গাঁজা পার্কে (ভবানীপুরে) মদের ঠেকে জল্লাদবাবু (জলধর ধর) হাফ পাইট টেনে, চারমিনার ধরিয়ে, দুই টান দিয়ে, ধোঁয়া ছেড়ে আরো বললেন, ‘আপনার মতো বেহায়া মহাভারতেও নেই, ব্যাসদেবও ফেল।’ সাতকাহনের সময়কাল ১৯৭৪-৮৭ সাল, কলকাতা তথা ভারতে। রামের বনবাস বারো বছর, নানা মুনি-ঋষির আশ্রমে, গিরিপর্বতে-জঙ্গলে-নদীতীরে৷যুদ্ধটুদ্ধ করেছেন, নাকালও হয়েছেন বহুবার। খোকনের বাস নগরে, ১৩ বছর, মুনি-ঋষি-অপ্সরা-দেবীর আশ্রয়ে, সান্নিধ্যে, সহবাসে৷জাতপাত-ধর্মের ধার ধারেনি। যুদ্ধ নিজের সঙ্গে, পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গেও সমাজরাষ্ট্রের সঙ্গে। অস্তিত্বের লড়াই টিকে থাকর লড়াই। ধর্মজাতপাত তোয়াক্কা করেনি। আক্রমণও করেছে তীক্ষè, চাঁছাছোলা ভাষায়, বিপদেও পড়েছে। বিয়ে করেনি, তবে, অবিবাহিত বিচ্ছেদ বহুবারই। নিজেকে নিয়েও মশকরা। আত্মজীবনীর অছিলায় অতীত দেখার চমৎকার দর্পণ। দিনতারিখ, ঘটনাসহ ডায়েরি লেখার অভ্যেস প্রায় নিয়মিত। কলকাতায় ছয়টি ডায়েরি। বার্লিনে নানা সময়ে বাসা বদলে লাপাত্তা হারিয়ে যাওয়া ডায়েরির কোনো কাহন নেই, পাছে ভুল হয়ে যায়। স্মৃতিও প্রতারণা করতে পারে। সংলাপ সঠিক হুবহু কি না (ডায়েরিতে লেখা সত্ত্বেও) যাচাইকৃত। বন্ধুর সঙ্গে শত্রুর সঙ্গে। চিঠিতে, ফোনে, ইÑমেইলে। কেউ শুধরেছেন কেউ আবার যোগ-বিয়োগও করেছেন। সবটাই গ্রহণীয় ও বর্জনীয়। দিনতারিখ-কথোপকথন-ঘটনাসহ ডায়েরি লেখার অভ্যেস নিয়মিত, কলকাতার ছয়টি ডায়েরি লাপাত্তা। হারিয়ে যাওয়া ডায়েরির কাহন নেই এখানে, পাছে ভুল হয় স্মৃতিচারণে। হুবহু সংলাপ সঠিক কি না (যদিও ডায়েরিতে উল্লেখিত), যাচাইকৃত বন্ধুর সঙ্গে, শত্রুর সঙ্গেও, চিঠিতে, ফোনে, ই-মেইলে। কেউ শুধরেছেন, কেউ বলেছেন ঠিকই আছে, কেউ আবার যোগ-বিয়োগও করেছেন৷বলা অতিরিক্ত, যোগ-বিয়োগ বাতিল। ‘পাকদণ্ডী’ বেরুচ্ছে যুগান্তরের রবিবাসরীয় সাময়িকীতে, ধারাবাহিক, লিখছেন লীলা মজুমদার, জিজ্ঞেস করে খোকনঃ “অতীতকথা-ঘটনা কী মনে রেখেছেন? সহজ উত্তর, ‘বয়স হলে স্মৃতি পরম্পরা, অ্যালবামে-রাখা গচ্ছিত ফটোর মতোই, সময়-পরিবেশ-ঘটনা সাজানো, নানামুখ উদ্ভাসিত, দৃশ্যময়’Ñ হয়তো। সাতকাহনের এক পর্ব ‘সুতানটী সমাচার’ নামে সাপ্তাহিক ২০০০ ঈদসংখ্যায় প্রকাশিত (২০০৮), তদারকি সরকার বাজেয়াপ্ত করেন। একটি শব্দের জন্য বালাদেশের তদারকি সরকার বাজেয়াপ্ত করেন। প্রকাশক শ্রীমান মাজেদুল হাসানের কথা ভেবে শব্দটি বাদ দিয়েছি। ধর্মান্ধতা এখন বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমিনে পোক্ত। অনুজ জাহিদ হায়দার, নানা ব্যস্ততা ব্যতিরেকে প্রুফ দেখেছেন, ধন্যবাদ।