কখনো কখনো জীবনে ঘটে যাওয়া ছোট ছোট একেকটা ঘটনা একেকটা অসাধারণ গল্প হয়ে ওঠে। কখনো পুরো জীবনটাই একটা সাদামাটা গল্পের। নিম্নবিত্তের আটপৌরে জীবনে টানাপড়েন নির্লজ্জের মত দৃশ্যমান। সেখানে বিমূর্ত শব্দটি কাব্যিক গয়না মাত্র। ‘বিমূর্ত একটি শব্দের খোঁজে’ একজন লেখকের এমনই পারিবারিক টানাপড়েনের গল্প। এই পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা থাকে না। কমিউনিজমে বিশ্বাসী চব্বিশ বছরের যুবক বিভাস এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল। চৌদ্দ বছর পরে পুনরায় সুজাতার জীবনে বিভাস ফিরে আসে। ওর বয়স সেই চব্বিশেই থেমে আছে। সুজাতা আটত্রিশ। বিভাস সেই আগের মত করে সুজাতার হাত ধরে হাঁটে, গল্প করে, হাসে। ‘করোটি’ গল্পটি এমন ব্যাখ্যাহীন ঘোরের গল্প। এই সমাজ খর্বাকৃতি নারীর জন্য কতটা সুখকর সেটি ‘বনসাই’ গল্পের মেয়ে তিথির থেকে বেশি কে জানে! পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক পিতা প্রফেসর অমর, একটি চৌকোণ ঘর যার দুনিয়া। ছেলের বৌ সুতপাকে বারবার বিগতা স্ত্রী অনিমা ভেবে ভুল করেন। তাঁর শীত লাগে, চা খেতে মন চায়, মধ্য দুপুরে ঘরে উড়ে বেড়ানো পুরুষ হাসি তাঁকে বিচলিত করে। তিনি চিৎকার করে নিজের কথা বলেন। কিন্তু তাঁর চিৎকারের শব্দমাত্রা ‘জিরো ডেসিবেল’। ‘মৃত্যুঞ্জয় ঘাট’ গল্পের মিজান মৃত্যুর সওদাগর। বুক পকেটে ওর অতীত। মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় শহর থেকে শহরে। কে জানত সেই পরোয়ানা তাকে নিয়ে যাবে এক চমকের নগরে। মৃত্যুঞ্জয় ঘাট গল্পগ্রন্থের দশটি গল্প এমনই, সাদামাটা কোনো জীবনের অথবা অসাধারণ কোনো ঘটনার। -লেখক