বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষানীতি বিষয়ক গবেষণা কর্মের ফলাফলের ভিত্তিতে রচনা এই গ্রন্থ। তাঁর এ গবেষণার ফলাফল Reconsidering the Prevalent English Language Education System in Bangladesh-শীর্ষক অভিসন্দর্ভ হিসেবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট জার্নালের প্রথম সংখ্যায় (ডিসেম্বর ২০১৬) প্রকাশিত হয়েছে, যা এই গ্রন্থের দ্বিতীয় পর্বে সংযোজন করা হয়েছে। এই গ্রন্থটি মূলত ক) ভাষাগত আদর্শ, ভাষানীতি ও ভাষা পরিকল্পনার নিরিখে বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত বাধ্যতামূলক ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার অযৌক্তিকতা, খ) বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে বাধ্যতামূলক ইংরেজি শিক্ষার নেতিবাচক প্রভাব ও গ) ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার পরিকল্পনাÑএ তিনটি বিষয় নিয়ে গঠিত। কাজটিতে ভাষাগত আদর্শ, ভাষানীতি ও ভাষা পরিকল্পনার নিরিখে দেখানো হয়েছে যে বাংলাদেশের অধিবাসীগণ বাংলা ভাষার ভিত্তিতে একক জাতি হিসেবে সুগঠিত অবস্থায় রয়েছে বলে দেশের প্রত্যেকের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে ইংরেজি শেখার প্রয়োজন নেই। আবার উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে যে উচ্চ দক্ষতার ইংরেজি শিক্ষা প্রয়োজন, বর্তমান ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থাটি তার জন্য মোটেই উপযোগী নয়। যে কারণে এই অসঙ্গতি ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার নানান নেতিবাচক প্রভাব সমাজ ও সংস্কৃতিতে পড়ছে। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরে তার সংস্কারের কতকগুলো কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে।
Title
বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র ও সংস্কারের রূপরেখা
অধ্যাপক ড. এ বি এম রেজাউল করিম ফকির ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে জুলাই ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলাস্থ রূপসী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে জাপানিজ ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি বর্তমানে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (২০২১-২০২৩) ও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের যুগ্ন-পরিচালক (২০২১-২০২৩) পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের বাইরেও এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি পূর্বে জাপানের টোকিও বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক (অক্টোবর ২০১৪-মার্চ ২০১৫) ও কোবে গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যাগত অধ্যাপক (অক্টোবর ২০১৫-জানুয়ারি ২০১৬) হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি সম্প্রতি মালয়েশিয়াস্থ সুলতান ইদ্রিস পেনডিডিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডিসেম্বর ২০২৩-নভেম্বর ২০২৪) অভ্যাগত অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ লাভ করেছেন। তিনি পূর্বে জপানের কোবে গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপান রাষ্ট্রভাষা ও ভাষাবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (নিনজাল)-এ যথাক্রমে ৬ মাস (অক্টোবর ১৯৯৪-মার্চ ১৯৯৫) ও ১ বছর (অক্টোবর ২০১৩-সেপ্টেম্বর ২০১৪) অভ্যাগত গবেষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তাঁর গবেষণা কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাপ্লাইড লিঙ্গুইস্টিকস কর্তৃক প্রদত্ত আইলা সলিডারিটি অ্যাওয়ার্ড-২০০৮ লাভ করেন। অধ্যাপক ড. এ বি এম রেজাউল করিম ফকির একাধারে একজন শিক্ষক, গবেষক, প্রবন্ধকার এবং একজন ব্লগার ও কলাম লেখক। তাঁর গবেষণার আগ্রহের প্রসঙ্গগুলো হলো সাধারণ ভাষাবিজ্ঞান, সমাজ ভাষাবিজ্ঞান, নৃতাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞান, ভাষা শিখন ও ভাষা আয়ত্ত্বকরণ, ভাষানীতি ও ভাষাপরিকল্পনা, ভাষা-সংসর্গ এবং দক্ষিণ এশিয়ার ভাষা-পরিস্থিতিতে ভাষা ও রাজনীতি। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি হলো: ১) Modality and Its Learner Variety in Japanese. Bern, Brussels, Frankfurt, New York and Oxford: Peter Lang AG, April 2012. ২) বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাব্যবস্থার চালচিত্র ও সংস্কারের রূপরেখা, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ৩) ভাষা-সংসর্গ বিদ্যার নিরিখে বাংলা ভাষার সৃজন, ঋদ্ধায়ন ও অবনমন পরিক্রমা, সময় প্রকাশন, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০২২। ৪) বিদেশি ভাষা শিক্ষা ও ভাষা ইনস্টিটিউট, পুথিপ্রকাশ, ঢাকা, নভেম্বর ২০২৩। ৫) ভাষিক রাজনীতি ও ভাষা-পরিস্থিতি: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, ডিসেম্বর ২০২৩। তিনি দেশে ১টি বিদেশি ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ব্যাপৃত রয়েছেন।