শ্রীঅরবিন্দের জন্মের পূর্বে শ্রীঅরবিন্দের পিতামাতার বিবাহ : রাজনারায়ণ বসু ছিলেন অরবিন্দের মাতামহ। রাজনারায়ণ বসুর জ্যেষ্ঠা কন্যাই অরবিন্দের মাতা। অরবিন্দের পিতা ও মাতার বিবাহ সম্বন্ধে রাজনারায়ণবাবুর কথাই উদ্ধৃত করিতেছি : “আমার ব্রাহ্মধর্ম্মের প্রথম অনুষ্ঠান আমার জ্যেষ্ঠা কন্যার বিবাহ ব্রাহ্মধৰ্ম্মমতে দেওয়া। এই বিবাহ মহা জাঁকজমকের সহিত দেওয়া হইয়াছিল। তখন ব্রাহ্মসমাজে দলাদলি আরম্ভ হয় নাই। ঐ বিবাহ উপলক্ষ্যে দেবেন্দ্রবাবু ও কেশববাবু উভয়েই মেদিনীপুর গিয়াছিলেন। “কলিকাতার অনেক ব্রাহ্ম এই উপলক্ষ্যে মেদিনীপুর গিয়াছিলেন। বিবাহ-সভা কলিকাতার ব্রাহ্ম ও মেদিনীপুরের ব্রাহ্ম এবং মেদিনীপুরস্থ প্রচলিত হিন্দুধৰ্ম্মাবলম্বী লইয়া হয়। সভাটি মহতী হইয়াছিল। তখন হারমোনিয়ম বাদ্যযন্ত্র ব্রাহ্মসমাজে ব্যবহৃত হইতে আরম্ভ হইয়াছে। উক্ত বাদ্যযন্ত্র কলিকাতা হইতে আনাইয়া সঙ্গীতসময়ে বিবাহ -সভায় বাজান হইয়াছিল। এই বিবাহে কেশববাবু প্রধান আচার্য্য এবং বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ও মেদিনীপুরের পরমোৎসাহী ব্রাহ্ম মেদিনীপুর জিলাস্কুলের হেডপণ্ডিত ভোলানাথ চক্রবর্তী মহাশয় আচার্য্যের কর্ম্ম এবং অযোধ্যানাথ পাকড়াশী পুরোহিতের কার্য্য করিয়াছিলেন। বিবাহকাৰ্য্য এত জাঁকজমকের সহিত সম্পন্ন হয় যে, দেবেন্দ্রবাবু পরে বলিয়াছিলেন যে—রাজারাজড়ার বিবাহে এমন হয় না। ...আমার জ্যেষ্ঠা কন্যার স্বামী শ্ৰীমান্ কৃষ্ণধন ঘোষকে আমার ‘ধর্ম্মতত্ত্ব-দীপিকা' উৎসর্গ করি।” (আত্ম-চরিত—পৃঃ ৮০)।