“অন্তিম শয্যায় খ্যাতিমানদের শেষ উক্তি" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ বাংলাভাষায় এ ধরনের সংগ্রহ সম্ভবত এই প্রথম বের হলাে। প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনের শেষ অবস্থা ও উক্তি আলাদাভাবে সংকলিত করার চিন্তাটা যদিও নতুন কোন বিষয় নয় তবুও এ ধরনের কাজ যে খুবই কম হয়েছে তা কিন্তু বাস্তব । অতীতে মুসলিম জীবনীকার, ঐতিহাসিক ও লেখকেরা এ ধরনের বহু কাজ করেছেন। নির্বাচিত কয়েকজন মুসলিম মনীষীর জীবন সায়াহ্নের নাতিদীর্ঘ বর্ণনা সংবলিত মাওলানা আযাদ রহ. এর অসাধারণ রচনা ইনসানিয়্যাত মওত কে দরওয়াযে পর উপমহাদেশে অমরত্ব লাভ করেছে। এ বিষয়টি নিয়ে উর্দু ও আরবীতে আরাে অনেক কাজ হয়েছে। পাশ্চাত্যেও last word এর সংগ্রহ নিয়ে অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়েছে। সমসাময়িক বিশ্বে গবেষণাধর্মী সংগ্রহে বলতে গেলে পশ্চিমারাই এগিয়ে। বাংলাভাষায় এ ধরনের কোন কাজ হবে এবং তা আমি করতে যাবাে—এ কথা পূর্বে ভাবিনি। কেননা, আমার হাতের বেশ কিছু বইয়ের কাজ অপরাপর কর্মব্যস্ততার দরুন শেষ করতে পারছি না বলে আমি। এমনিতেই খুব মনােবেদনায় ভুগছি। ইমাম গাযযালী রহ. এর একাধিক গ্রন্থের অনুবাদক, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, মুফতি মুহাম্মদ উবায়দুল্লাহ আমার একান্ত শ্রদ্ধেয়জন। একদিন তিনি বিদেশি একটি বই আমাকে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, এটা দেখুন! এ ধরনের একটি বই এ দেশেও হওয়া দরকার । আমি চাই, আপনার হাতেই এটি হােক । আমি কোন কিছু না বলে সেদিনই কাগজ কলম নিয়ে কাজ শুরু করে দেই। আজ সে কাজ শেষ পর্যায়ে উপনীত । আলহামদুলিল্লাহ! বইটি লিখতে গিয়ে আমার সর্বাপেক্ষা বেশি কাজে এসেছে দিল্লি থেকে প্রকাশিত মাশাহীর কে আখেরী কালেমাত বইটি। এ ছাড়া আরাে বহু সংখ্যক বই-পুস্তক, জীবনী গ্রন্থ, পত্র-পত্রিকা, সংকলন ও সাময়িকী থেকে আমাকে এসব তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের কৃতিসন্তান দেশবরেণ্য আলেমে-দীন ও সংসদ সদস্য মাওলানা আতাউর রহমান খান (রহ.) -এর বড় ছেলে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী। তিনি দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। নদভী দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেছেন ১৯৮৩ সালে কিশোরগঞ্জ এর জামিয়া ইমদাদিয়া থেকে। এরপর চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া থেকে আরবি সাহিত্যে তাখাসসুস করেছেন ১৯৮৪ সালে এবং স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ১৯৮৫-৮৬ সালে ভারতের নদওয়াতুল ওলামায়। এম.এ ডিগ্রী নিয়েছেন ১৯৯৪ সালে। এরই মাঝে আবার ১৯৮৫ সালে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামি দাওয়াহ ও সংস্কৃতির ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১৯৯২ সালে রাষ্ট্র ও রাজনীতি বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করেছেন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মিডিয়ার ওপর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কোর্সও করেছেন জনাব নদভী। উবায়দুর রহান খান নদভীর পিতার নাম মাওলানা আতাউর রহমান খান এবং মাতার নাম মুরশিদা-ই-আমিনা। ১৯৬৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের জামিয়া রোডস্থ নূর মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন নদভী। ২৫ বছর যাবৎ জুমআর নামাজের খতিব হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন ঢাকার মিরপুরস্থ মদিনা নগর মসজিদে। ১৯৭৮ সালে দৈনিক আল-আজাদে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। লেখার নাম ছিলো সাহিত্য সাধনা। গুণী এই মানুষটি অর্জন করেছেন বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা। কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ পদক, শুরূক সাহিত্য পদক, শিকড় সম্মননা পদক, আদর্শ নারী গুণীজন সম্মাননা এবং মারকাজুত তাহফিজ সম্মাননা তন্মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য।