"বুনে গেলাম আশার স্বপন-গভর্নরের দিনলিপি" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: দীর্ঘদিন গবেষণা ও অধ্যাপনার একপর্যায়ে গরিবের অর্থনীতিবিদখ্যাত ড. আতিউর রহমান ২০০৯ সালের ৩ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যােগদান করেন। যােগদানের পর থেকেই তিনি। প্রচলিত ধারার ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সমগ্র ব্যাংকিং খাতকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, মানবিক ও সুস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে অসংখ্য সংস্কারমূলক কাজ সম্পন্ন করেন। এককথায়, তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচলিত সংজ্ঞা ও অবস্থানকেই আমূল পাল্টে দেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাত বছর পূর্তির কিছুদিন আগে তিনি গভর্নর পদ থেকে স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেন। এই সময়ে তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের আর্থিকখাতে গণমানুষের স্বার্থে যেসব নতুন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে, এতদিন তিনি যেসব কথা বলেছেন, যেসব স্বপ্ন দেখেছেন, দেখিয়েছেন এবং স্বপ্নপূরণে যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন সেসবের দিনভিত্তিক উল্লেখযােগ্য চিত্র ফুটে উঠেছে এই বইটিতে। বলা যায়, তার সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের ব্যাংকিং খাতের বদলে যাওয়া এবং স্বপ্ন পূরণের এই যে অভিযাত্রা তাতে নতুন প্রজন্মের কেন্দ্রীয় ব্যাংকার, আর্থিক খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষ এবং তরুণ ব্যাংকাররা যেন যুক্ত হতে পারেন, সাধারণ পাঠকরাও যেন উপকৃত হন- সেজন্যই ড. রহমানের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
Atiur Rahman- রহমান বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। প্রচলিত ধারার বাইরের এক উন্নয়ন গবেষক। কর্মজীবীর। স্বাপ্নিক এই পরিশ্রমী লেখক যা বিশ্বাস করেন তাই অপকটে প্রকাশও করেন। সর্বক্ষণ সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে দেখবার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে। প্রচলিত উন্নয়ন ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে দেখে চলেছেন দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি ও রাজনীতিকে। বহুমাত্রিক বিষয় হিসেবে উন্নয়নকে বাংলা ভাষায় সহজ করে উপস্থাপনের কৃতিত্ব তাঁকে দিতেই হবে। গরিবের প্রতি তাঁর পক্ষপাতিত্বের কথা সকলেরই জানা। সব লেখাতেই তিনি তা তুলে ধরেন তাঁর হৃদয় দিয়ে। ১৯৮৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি প্রাপ্ত ড. আতিউর রহমান স্বদেশেই রয়ে গেছেন। সর্বক্ষণ ব্যস্ত রয়েছেন ব্যতিক্রমী গবেষণায়, গণমাধ্যমে, জনবিতর্কে, সাধারণের ভাষায় লেখালেখিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রহমান বর্তমানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি সিডিএফ-এর সভাপতি, মোনাজাতউদ্দীন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্বসাহিত্য-কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি। জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের তিনি সাবেক চেয়ারম্যান। বিআইডিএস-এর একজন সাবেক উর্ধ্বতন গবেষক ড. রহমানের অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়েছে দেশের ও বিদেশের নামকরা প্রকাশনা সংস্থা থেকে। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ভাষা আন্দোলন : আর্থ-সামাজিক পটভূমি’; মুক্তিযুদ্ধের তিনটি বই :‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধের মানুষ’; ‘অসহযোগের দিনগুলি’,রবীন্দ্র-অমর্ত্য ভাবনা;’ ‘উন্নয়ন আলাপ;’ ‘জনগণের বাজেট;’ ‘আলো আঁধারের বাংলাদেশ;’ ‘সুশাসনের সন্ধানে;’ ‘ অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন;’ ‘উন্নয়ন কার জন্য;’ ‘অপউন্নয়ন;’ ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ খুঁজে ফেরা;’ `Peasants and classes;’ `Education for Development’ ইত্যাদি। দেশি ও বিদেশি প্রফেশনাল জার্নালে তাঁর বিপুল সংখ্যক গবেষণা-প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। সব মিলে তিরিশটিরও বেশি বইয়ের লেখক ড. রহমান।