ফ্ল্যাপে লিখা কথা এ জাতির দুর্ভাগ্য, বারবার তাদের বিদেশি শাসকদের অধীনতা বরণ করে নিতে হয়েছে। সুজলা-সুফলা এ ব-দ্বীপ অঞ্চলটির প্রাচুর্য ভিনজাতিকে আকর্ষণ করেছে। আমাদের শাসন করেছে বহিরাগত বিভিন্ন জাতি। ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে ইংরেজ বেনিয়ারা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা হরণ করে নেয়। তারপা এই দেশকে শাসন করে প্রায় দুশো বছর। কিন্তু এই ভূখণ্ডের মানুষের মুক্তিসংগ্রাম চলতেই থাকে। হিন্দু-মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তোলে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন। সে আন্দোলনের কাছে মাথানত করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশরা। এরপর ১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারতবর্ষকে দু’ভাগে বিভক্ত করার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় । সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের স্বপ্ন রচিত হয়েছিল পাকিস্তানকে ঘিরে । কিন্তু বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানীদের বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে অচিরেই তাদের সে স্বপ্ন ভেঙে যায় । পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষাকে অস্বীকার করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে, যা ছিল বাঙালি জাতিসত্তার ওপর প্রথম আঘাত। এরপর ‘৭০-এর নির্বাচনে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনক্ষমতা পরিচালনা অধিকার অর্জন করলেও নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের বঞ্চিত করা হয়। এমন সব বঞ্চনা ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্বাধীনতাকামী বাঙালিরা তৎকালীন সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু করে। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয় বাঙালিদের মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের কঠোর মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানিদের কবল থেকে ছিনিয়ে নেয় স্বাধীনতার লাল সূর্য। কিন্তু সেজন্য চরম ত্যাগ স্বীকার করতে হয় আমাদের মা, বোন ,ভাই ও সন্তানদের। সেই ত্যাগ ও বীরত্বের কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ সমগ্র’ সংকলনটি। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা নানাস্বাদের এই কাহিনীগুলো পাঠকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় সেই দিনগুলোতে, যে দিনগুলো এ জাতিকে স্বাধীনতার মতো একটি অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছিলো।
Enayet Rasul স্বনামখ্যাত শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী ও বেগম মেহের উন নিসা’র দ্বিতীয় পুত্র। ১৯৫৩ সালের ১২ জুন বিক্রমপুরের ধাইদা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। লেখাপড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর। ১৯৬৫ সালে একটি ছড়া লেখার মাধ্যমে লেখালেখির জগতে বিচরণ শুরু হয়। প্রথম ছড়াটি ছাপা হয় ‘জুনিয়র রেডক্রস’ পত্রিকায়। সব বয়সী পাঠকদের জন্যে লেখেন এনায়েত রসুল। তবে মূলত শিশুসাহিত্যিক। শিশুসাহিত্য সষ্টিতে তাঁর দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এনায়েত রসুলের পাঠকপ্রিয় বইগুলোর মধ্যে এক আকাশ মেঘ একপশলা বৃষ্টি, ‘পোড়োবাড়ি রহস্য', ডক্টর নিপুর এক্সপেরিমেন্ট', ‘নিঝুমগড় ভয়ঙ্কর’, ‘ভয়ঙ্করের হাতছানি’ বাতিঘরের বুড়ো’, ‘অন্যরকম বুবাই’, ‘ব্ল্যাকহোল’ ‘ভাষার কথা লেখার কথা’, ‘মেঘপাখি’ ‘মিশন উইথ মাউন্টব্যাটেন, ‘বাঙালির জাতিসত্তা ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, ‘বিজয়ের ছবি', 'মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে’ ‘ভূতসমগ্র', ‘কিশোর গল্পসমগ্র ‘চিচি’, ‘খেয়ালি রাজার দেশে, ‘অপি ও চেঙা বেঙা’ ‘পিকু ও ছেলেধরা', ফুলবালিকা', এক মায়ের গল্প' ইত্যাদি। ‘এক মায়ের গল্প’টির জন্য তিনি ১৯০৮ সালে মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন । বর্তমানে এনায়েত রসুল জাতীয় দৈনিক আমার দেশ’-এ সহ-সম্পাদক পদে কর্মরত। সেইসঙ্গে ছোটদের পাতা ‘এক্কাদোক্কা' পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন।