"ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো জিন্নাহ" বইটিতে লেখা ফ্ল্যাপের কথা: অতীন দাশ লিখিত ‘জিন্নাহ : ইতিহাসের এক ট্র্যাজিক হিরো’ (যুগশঙ্খ ২৪-০৬-০৫)। অনবদ্য ঐতিহাসিক নিবন্ধটি পড়েছি। কিছুদিন পূর্বে জিন্নাহ-র ওপর শ্রী অতীন দাশ আরও একখানা প্রবন্ধ লিখেছিলেন। লেখা দুটি একে অপরের পরিপূরক। দুটি লেখাই তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ। ইতিহাস লিখতে হলে শুধু তথ্য থাকলেই হল না, চাই সঠিক এবং সত্যানুসন্ধানী মন। আবেগ ইতিহাসে বর্জনীয় হলেও উপস্থাপনার মুন্সিয়ানার গুণে। আবেগও সজীব হয়ে ওঠে। জিন্নাহ : ইতিহাসের এক এক ট্র্যাজিক হিরো’ এই নামকরণটি সার্থক। শ্রী অতীন দাশ একজন সাহিত্যিক, কবি কিন্তু তাঁর সাহিত্যিক সত্ত্বার। মধ্যে নিহিত রয়েছে ঐতিহাসিকমন। গান্ধীজির শেষজীবন ছিল ট্র্যাজিক। তিনি বলেছিলেন, তাঁর মৃতদেহের ওপর ভারত ব্যবচ্ছেদ হবে। কার্যত দেশভাগের বিরোধিতা তিনি আমৃত্যু করে গেছেন কিন্তু ক্ষমতালিপু তাঁর শিষ্যরা তাকে অবহেলায়। পরিত্যাগ করেছিলেন গভসের গুলি তাঁকে। ধরা পৃষ্ঠ থেকে সরিয়ে দেবার আগেই তার প্রিয় শিষ্যদের হাতে তার মৃত্যু হয়। জিন্নাহর অবস্থা আরও করুণ। মৃত্যুর পূর্বে তার যে হাল হয়েছিল—একজন সফল উদ্ধত। রাজনৈতিক নেতার ব্যর্থ পরিণাম—তার। বিবরণ সংক্ষেপেশ্রী অতীন দাশ লিখেছেন। অস্বীকার করে লাভ নেই জিন্নাহর মতো একজন প্রতিভাবান, উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতার। প্রতি সে দিনের ভারতীয় নেতৃবর্গ সুবিচার করেননি। তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে উপমহাদেশের প্রতিটি মানুষকে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের। বিদ্যাবত্তা নিকৃষ্টমানের রাজেন্দ্র প্রসাদ, পণ্ডিত নেহরু, অশোক মেহতা বা জাকির হোসেনরা বিরল প্রজাতির নেতা। অতীব দুঃখের কথা আজ ভারত ভাগের এতদিন। পরও জিন্নাহ সম্পর্কে আমাদের নেতারা। সম্যক বিচার করে উঠতে পারলেন না। আবোল তাবোল বকেই চলেছেন। পরিশেষে জানাই এই নিবন্ধ সিরিয়াস পাঠকদের কাছে আদৃত হবে। সুহাস চট্টোপাধ্যায় ইতিহাসবিদ, (সদস্য, ভারতীয় ইতিহাস। পরিষদ, নতুন দিল্লি)