বঙ্গদেশের সীমানা ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের বিবরণ বাঙ্গালা ইতিহাসপাঠক ও পর্যটকগণ অবগত আছেন যে, বাঙ্গলা সুবা দ্বিতীয় আকলীম ভুক্ত। ইহার পূর্বসীমা এসলামাবাদ অর্থাৎ চট্টগ্রাম ও পশ্চিম সীমা তিলিয়া গড্ডি’; পূৰ্ব্ব পশ্চিমে দৈর্ঘ্য অনুমান ৪০০ শত ক্রোশ ; বঙ্গের উত্তর প্রান্তে পর্বতরাজি বর্তমান ও দক্ষিণ প্রান্তে সরকার মান্দারেণ। সরকার মান্দারেণ বঙ্গ সুবার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত, উত্তর দক্ষিণে প্রস্থে অনুমান ২০০ শত ক্রোশ। কিন্তু পাদশাহ জালালউদ্দীন মোহাম্মদ আকবর গাজির রাজত্ব কালে কালাপাহাড় উড়িষ্যা দেশ জয় করিয়া বঙ্গরাজ্যভুক্ত করাতে উহার আয়তন দৈর্ঘে ৪৩ ক্রোশ ও প্রস্থে ২০ ক্রোশ বৰ্দ্ধিত হইয়াছে। উড়িষ্যার দক্ষিণ সীমা সমুদ্র, উত্তর পূর্ব্ব সীমা পর্ব্বত, এবং পশ্চিম সীমা বিহার। আকবরের রাজত্বকালে ইছা খাঁ আফগানী পূৰ্ব্ব প্রদেশ সমূহ জয় করিয়া আকবর পাদশাহের নামে খোতবা ও শিক্ষা প্রচলিত করিয়া উহা বঙ্গরাজ্যভুক্ত করেন। এই সুবা ৮৭ মহালে ও ২৮ সরকারে বিভক্ত। বার্ষিক রাজস্ব অনুমানিক ৫৯৮৪৫৯৩৯ দামরি অর্থাৎ কেছরার শিক্কার পরিমাণে ১৪৯৬১৪৮২ তের আনা নির্দ্ধারিত ছিল। ২৩৩৩০জন অশ্বারোহী এবং ৮০১১৫৮ জন পদাতিক সৈন্য ; ১৮০টি হস্তী, ৪২৬০টি তোপ ও ৪৪০০ রণতরী সহকারে সর্ব্বদা নিযুক্ত থাকিত। ত্রিপুরা চট্টগ্রামের উত্তর প্রান্তে ত্রিপুরা রাজ্য অবস্থিত। ত্রিপুরা বৃহৎ দেশ। এই দেশের রাজার উপাধি মাণিক্য,—যেমন নয়ামাণিক্য। সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণ নারায়ণ উপাধিতে ভূষিত। ত্রিপুরা রাজ্যে এক হাজার হস্তি ও দুই লক্ষ পদাতিক সৈন্য আছে। এখানে আরোহণ করিবার উপযুক্ত অশ্ব পাওয়া যায় না।