উপোসি বাংলা : সাময়িকপত্রে পঞ্চাশের মন্বন্তর বাংলা-সরকারের চাউল ক্রয় ১১ই সেপ্টেম্বরের যুগান্তর পত্রিকায় নিম্নলিখিত মন্তব্যটি প্রকাশিত হয় : “এসোসিয়েটেড প্রেসের মারফৎ প্রচার করা হইয়াছে যে ৯ই সেপ্টেম্বর তারিখে গবর্মেন্ট কলিকাতাতে ২৪-টাকা মণ দরে ২৫ হাজার মণ চাউল খরিদ করিয়াছেন। চাউলের দর যখন কলিকাতায় ২০ টাকা মণ ছিল, তখন তাহা সাত-আট টাকায় নামাইবার প্রতিজ্ঞা করিয়া যাঁহারা আস্ফালন করিয়াছিলেন, তাঁহারাই আজ ২৪ টাকা দরে চাউল কিনিয়া লোককে বুঝাইবার চেষ্টা করিতেছেন যে চাউলের দর কমিতেছে। কিন্তু এই ২৪ টাকা মণ দরে হঠাৎ এক দিন ২৫ হাজার মণ চাউল খরিদের সংক্ষিপ্ত সংবাদ পাঠ করিয়া স্বতঃই কতকগুলি প্রশ্নের উদয় হয়, যথা—1) এই চাউল কাহার নিকট হইতে খরিদ করা হইয়াছে, ২) চাউলটা আউস না আমন, ৩) কবে এই চাউল কলিকাতায় আসিয়াছে, ৪) বিক্ৰেতা কত দরে খরিদ করিয়াছিল, ৫) কত দিন এই চাউল বিক্রেতার হাতে ছিল, ৬) এই চাউলের জন্য তাহার লাইসেন্স ছিল কি, ৭) লাইসেন্স থাকিলে তাহার নিকট যে এই চাউল আছে তাহা সে জানাইয়াছিল কি, ৮) জানাইয়া থাকিলে কবে জানাইয়াছিল, ৯) না জানাইয়া থাকিলে গবর্ম্মেণ্ট এই চাউলের সন্ধান কি করিয়া পাইলেন, ১০) বিক্রেতা স্বেচ্ছায় এই দরে গবর্মেণ্টকে চাউল দিয়াছে, না গবর্ম্মেণ্ট এই দরে বিক্রয় করিতে তাহকে বাধ্য করিয়াছেন, ১১) এই চাউল অসামরিক না সামরিক বিভাগের জন্য খরিদ করা হইয়াছে ? আশা করি, গবর্মেন্ট অবিলম্বে এসোসিয়েটেড প্রেসের মারফৎ এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়া অকস্মাৎ এভাবে ২৫ হাজার মণ চাউল খরিদ করার সংবাদ প্রচারের প্রকৃত তাৎপর্য্য জনসাধারণকে বুঝাইয়া দিবেন। অন্যথায় এই প্রচারকার্য্য নানা সন্দেহ উদ্রেক করিবে।”