তাঁর কবি কৃতির প্রধান বৈশিষ্ট্য তাঁর আকর্ষণীয় গ্রাম্য-ভাষা। বাঁকুড়ার পাহাড়-শুশুনিয়ার মানুষ, বাঁকুড়ার আঞ্চলিক লৌকিক ভাষাতেই তিনি কবিতা লিখে চলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শিখেও গ্রাম্যজনের মুখের ভাষায় তিনি যেভাবে কবিতা লিখেছেন, তা বড় অভিনন্দন যোগ্য। তাই তাঁর কাব্য যে কোন চাষাভূষাও পাঠ মাত্রই হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। তিনি যখন বলেন “চাষা ভূষা মানুষ আজ্ঞা অন্য কিছুই জানি না লেতালেম্বর লিয়ম কানন আমরা কিছুই মানি না... ঘর ত লয় শুয়ারপি শুইয়ে থাকা দায় ব’ম্যাকালে হলহঁড়াইয়া লালা ব’ইয়ে যায় ।..... তখন বুঝি, তাঁর কবিতার স্পিরিট কতখানি। “ঐকতান" কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বুঝি এমন সব ‘কবি’ দের জন্যেই “কান পেতে” আছেন ৷ কৃষ্ণদুলালের কৃতিত্ব তাঁর বিষয়বস্তু নির্বাচনেও। বর্তমান দিন যাপনের দুর্গতিকেই তিনি কাব্যরূপ দিয়েছেন। চলমান সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনের সমস্ত ভণ্ডামী, অবিচার, ইতরতা, শোষণ ও বঞ্চনা যেমন তাঁর রচনায় পরিস্ফুট হয়েছে তেমনি নিরন্ন শ্রমজীবি গ্রাম্যজনের দুঃখ ও দুর্গতি, গলাগলি ও গালাগালি, সাধ ও আকাঙ্ক্ষা, প্রেম ও অপ্রেম সবই প্রতিবিম্বিত হয়েছে।... ডাঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, ডি.লিট. বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়